বিশ্বের বৃহত্তম মাংস উৎপাদনকারী কোম্পানি জেবিএস-এর বিরুদ্ধে আমাজন অরণ্যে গাছ কাটার প্রতিশ্রুতি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে গরুর মাংস সরবরাহ শৃঙ্খলকে বনভূমি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করলেও, বাস্তবে তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় খামারি ও শ্রমিক নেতারা।
ব্রাজিলের এই মাংস উৎপাদনকারী সংস্থাটি, যা বিশ্বজুড়ে গরুর মাংসের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে, তাদের এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গার্ডিয়ান, আনআর্থড এবং রিপোর্টার ব্রাজিল-এর সাংবাদিকদের একটি দল প্যারা এবং রনদোনিয়া রাজ্যের কয়েক হাজার খামারের মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে।
তাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে জেবিএস-এর পক্ষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন হবে বলে অনেকে মনে করেন।
খামারিদের একাংশ মনে করেন, অবৈধভাবে গবাদি পশু সরবরাহ এবং জমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা, সময়সীমার মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করা প্রায় অসম্ভব করে তুলবে। তাদের মতে, সরকার এবং জেবিএস উভয়কেই এই বিষয়ে আরও সক্রিয় হতে হবে।
যদিও জেবিএস-এর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা দাবি করেছে, বনভূমি ধ্বংসের ঝুঁকি কমাতে তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল পর্যবেক্ষণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
তারা আরও জানিয়েছে, খামারিদের বিনামূল্যে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আমাজনের টেকসই উন্নয়নে অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
তবে, বিশেষজ্ঞদের মতে, জেবিএস-এর এই প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং জমির মালিকানা নিয়ে অনিশ্চয়তা-সহ বিভিন্ন কারণে তাদের পক্ষে সময়সীমার মধ্যে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কঠিন হবে।
অনেক খামারি নেতা মনে করেন, নতুন এই পদ্ধতির কারণে ছোট ও মাঝারি আকারের উৎপাদকদের ওপর বেশি চাপ পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আমাজন পৃথিবীর কার্বন শোষক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বনভূমি ধ্বংসের ফলে এই অঞ্চলের জলবায়ুর পরিবর্তন হবে, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নে আরও বেশি প্রভাব ফেলবে।
এই পরিস্থিতিতে, জেবিএস-এর প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হবে, সেদিকে এখন সকলের নজর।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান