ডিজিটাল প্রতারণা থেকে সাবধান: মোবাইল ব্যবহারকারীদের ফাঁদে ফেলতে ওত পেতে আছে প্রতারকরা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনাও বেড়ে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, এমনকি আমাদের বাংলাদেশেও, প্রতারকরা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে টোল পরিশোধ না করার অভিযোগে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে চালকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর টোল সংক্রান্ত জালিয়াতির শিকার হয়ে প্রায় ৬০,০০০ এর বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রতারকরা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের টোল পরিশোধের কথা বলে এবং এর সাথে একটি লিঙ্ক পাঠায়।
এই লিঙ্কে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন – ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময়, এই মেসেজগুলো আসল টোল কর্তৃপক্ষের মতো দেখতে হলেও, আসলে এগুলো প্রতারকদের পাঠানো।
এই ধরনের প্রতারণার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের মধ্যে ভয় এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করা। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ হঠাৎ করে একটি টেক্সট মেসেজ পান যেখানে বলা হয় যে তাকে দ্রুত টোল পরিশোধ করতে হবে, তাহলে তিনি সম্ভবত দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
প্রতারকরা এই সুযোগটিই কাজে লাগায়। তারা এমন সব বার্তা পাঠায় যা গ্রাহকদের জরুরি অবস্থার মধ্যে ফেলে এবং দ্রুত কিছু করতে প্ররোচিত করে।
এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে। প্রথমত, অচেনা নম্বর থেকে আসা কোনো লিঙ্কে ক্লিক করা উচিত নয়। বিশেষ করে, যদি সেই মেসেজে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন – ব্যবহারকারীর নাম বা পাসওয়ার্ড জানতে চাওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, কোনো সন্দেহজনক মেসেজ পেলে, সরাসরি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সেটি আসল নাকি প্রতারণা। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো ব্যাংক আপনাকে ফোন করে আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য চায়, তাহলে সরাসরি ব্যাংকের হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে তাদের সাথে কথা বলুন।
বাংলাদেশেও বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এবং অনলাইন লেনদেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়, ডিজিটাল প্রতারণার ঝুঁকি বেড়েছে। প্রায়ই শোনা যায়, ভুয়া অফার বা লটারি জেতার প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তাই, যেকোনো ধরনের লোভনীয় প্রস্তাবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, আমাদের প্রত্যেকের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। অপরিচিত কারো সাথে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
অনলাইনে কেনাকাটা করার সময়, ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা যাচাই করুন। কোনো সন্দেহজনক কিছু নজরে এলে, সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান।
সবশেষে, মনে রাখতে হবে, ডিজিটাল প্রতারণা একটি জটিল সমস্যা এবং এর থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সচেতন থাকুন, সতর্ক থাকুন, এবং আপনার মূল্যবান তথ্য সুরক্ষিত রাখুন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন