ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত হচ্ছে। শুক্রবার সিএনএন-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব দিয়েছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে, যা আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এরপর ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় অভিযান শুরু করার পর দেশটির আরও চারটি অঞ্চল— পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক, এবং দক্ষিণের খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া— частично (আংশিকভাবে) দখল করে নেয় রাশিয়া।
এই বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে, ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবনাটি কিয়েভ (Kyiv)-এর জন্য সম্ভবত গ্রহণযোগ্য হবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelensky) মার্চ মাসে বলেছিলেন, তার সরকার কোনো অধিকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না।
এটি তাদের জন্য একটি ‘লাল রেখা’ (red line)।
আলোচনা অনুযায়ী, যুদ্ধ বন্ধের জন্য প্রস্তাবিত কাঠামোর অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার কথাও বলা হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, এই প্রস্তাবনাটি ইতিমধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেনের সঙ্গে প্যারিসে আলোচনা করা হয়েছে।
এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও (Marco Rubio) এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের (Sergey Lavrov) মধ্যে টেলিফোনেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
যদিও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) দাবি করেছেন, তিনি একদিনেই ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে পারবেন, তবে রাশিয়ার অনমনীয় মনোভাবের কারণে শান্তি চুক্তি স্থাপনের প্রচেষ্টাগুলো ব্যাহত হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে (White House) বিষয়টি নিয়ে হতাশা বাড়ছে।
মার্কিন সিনেটর রুবিও শুক্রবার সতর্ক করে বলেন, যদি দ্রুত কোনো অগ্রগতি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা থেকে সরে আসতে পারে।
তবে ট্রাম্প রুবিওর সঙ্গে সহমত পোষণ করলেও, একটি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আরও বেশি আশাবাদী বলে মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই, তবে আমরা দ্রুত এটি সম্পন্ন করতে চাই।’
সূত্রটি জানিয়েছে, প্রস্তাবনার কাঠামো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
আগামী সপ্তাহে লন্ডনে ইউরোপীয় এবং ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
একই সঙ্গে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় আসার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দূত স্টিভ উইটকফকে (Steve Witkoff) পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন