দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপতি মুন জে-ইনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের তদন্ত শেষে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি দেশটির একটি আদালত এই রায় দেয়। মুন এই অভিযোগকে ‘অন্যায়’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন।
খবর সূত্রে জানা যায়, মুন মনে করেন, প্রসিকিউটররা তাদের ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন এবং একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়েই তারা কাজ করছেন।
অভিযোগ উঠেছে, মুন-এর জামাতা একটি বাজেট এয়ারলাইন্সে ‘কাজ না করেও’ মোটা অঙ্কের বেতন পেতেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসিকিউটরদের মতে, মুন ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে থাই ইস্টার জেট নামের একটি বিমান সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা লি সাং-জিকের কাছ থেকে ২১৯ মিলিয়ন ওন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) ঘুষ নিয়েছেন। অভিযোগ, মুন-এর জামাতার জন্য আর্থিক সুবিধা দেওয়াই ছিল ঘুষের শর্ত।
জানা যায়, মুন-এর জামাতা ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে এই সুবিধা ভোগ করেছেন। যদিও তিনি ২০১৯ সালে এই এয়ারলাইন্সে চাকরি ছেড়ে দেন।
প্রসিকিউটররা বলছেন, লি সাং-জিক, যিনি মুন-এর নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেছিলেন, সম্ভবত এই সুবিধার বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা করেছিলেন। পরে লি-কে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কোরিয়া স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ এবং স্টার্টআপ এজেন্সির প্রধান করা হয়েছিল এবং মুন-এর দল তাকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল।
মুন-এর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ এমন এক সময়ে এলো, যখন দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। আগামী জুন মাসে দেশটিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এই অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের মতে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সমর্থকরা সাবেক প্রেসিডেন্টকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রসিকিউটরদের ব্যবহার করছেন।
ইউন সুক-ইওলের সঙ্গে মুন-এর রাজনৈতিক মতবিরোধ ছিল বলেও জানা যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের অভিযোগ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস