যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে রেল ধর্মঘটের আশঙ্কা, ভোগান্তিতে ১ লাখ যাত্রী।
নিউ ইয়র্ক মহানগরীতে রেল শ্রমিকদের সম্ভাব্য ধর্মঘটের কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন প্রায় এক লক্ষ যাত্রী। শুক্রবার ভোর থেকে নিউ জার্সি ট্রানজিটের (এনজে ট্রানজিট) প্রকৌশলীরা ধর্মঘটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বেতন-ভাতা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই ধর্মঘট হলে তা শুধু সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকেই ব্যাহত করবে না, বরং এর প্রভাব পড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনোদন জগতেও।
কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রমিক সংগঠন এবং কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।
নিউ জার্সির এই রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন প্রায় এক লাখ যাত্রীকে পরিষেবা দিয়ে থাকে, যাদের অধিকাংশই নিউ ইয়র্ক শহরে যাতায়াত করেন।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং সম্ভব হলে বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রেলওয়ের প্রকৌশলীদের সংগঠন তাদের সদস্যদের জন্য ২০১৮ সাল থেকে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছে।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, তারা অন্যান্য রেলওয়ের কর্মীদের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম বেতন পান।
শ্রমিক নেতারা তাদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে অনড় রয়েছেন।
সংগঠনের প্রধান টমাস হাস এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা এনজে ট্রানজিটের প্রকৌশলীরা কেবল একটি ন্যায্য এবং প্রতিযোগিতামূলক মজুরি চাইছি।
এই সমস্যার সমাধান করার জন্য আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই।
আমরা চাই না পরিষেবা ব্যাহত হোক, কিন্তু আমরা এখন শেষ পর্যায়ে।
অন্যদিকে, এনজে ট্রানজিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস কলুরি জানিয়েছেন, তিনি এখনও ধর্মঘট এড়াতে আশাবাদী।
তিনি বলেন, “আমরা এর আগেও একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিলাম, কিন্তু সেটি বাতিল হয়ে যায়। আমাদের হাতে এখনও প্রায় ২৯ ঘণ্টা সময় আছে।
কলুরি আরও জানান, তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসার চেষ্টা করছেন।
ধর্মঘটের কারণে শুধু কর্মজীবীরাই নন, ক্ষতির মুখে পড়বেন শাকিরা এবং বিয়ন্সের মতো তারকা শিল্পীদের ভক্তরাও।
আগামী বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার মেটলাইফ স্টেডিয়ামে শাকিরা এবং তার পরের সপ্তাহে বিয়ন্সের কনসার্টে যোগ দিতে আসা দর্শকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে।
কারণ, ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, রেল শ্রমিকদের ধর্মঘট সীমিত করার ক্ষমতা রয়েছে কংগ্রেসের হাতে।
তবে, সাধারণত একটি ছোট আকারের স্থানীয় রেলের ধর্মঘটের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা কম থাকে।
অতীতেও দেখা গেছে, কংগ্রেসের হস্তক্ষেপ ছাড়াই অনেক ধর্মঘট কয়েক সপ্তাহ এমনকি মাস ধরে চলেছে।
১৯৮৩ সালে নিউ জার্সি ট্রানজিটে এক মাসের ধর্মঘট হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন