খরস্রোতা জীবনের ভিড় থেকে পালাতে চান? তাহলে ইউরোপের এই ২০টি লুকানো সমুদ্র সৈকত আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। যেখানে কোলাহল নেই, আছে প্রকৃতির নীরবতা আর স্নিগ্ধতা। আসুন, জেনে নিই ইউরোপের এমন কিছু সমুদ্র সৈকতের ঠিকানা, যা আপনাকে নতুন করে সমুদ্র ভালোবাসতে শেখাবে।
প্রথমে আসা যাক পর্তুগালের ‘প্রাইয়া দে ওডিসিইক্স’-এর কথা। সবুজে ঘেরা এই সৈকতটি ‘সুইদোয়েস্তে আলenteজানো’ এবং ‘কোস্টা ভিকেন্তিনা’ প্রকৃতি উদ্যানের পাশে অবস্থিত। এখানে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আপনাকে সার্ফিং এবং বডি বোর্ডিংয়ের সুযোগ করে দেবে, আর নদীর অগভীর জল ছোট শিশুদের জন্য আদর্শ।
এরপর চলুন ক্রোয়েশিয়ার ‘সাপলুনারা’ সৈকতে। ম্লজেত দ্বীপের পূর্বে অবস্থিত এই সৈকতটিতে তিনটি বালুকাময় বিচ রয়েছে: ভেলিকা, মালা এবং ব্লাকা। এখানকার স্থানীয় মালিকদের দ্বারা পরিচালিত কিছু সাধারণ অ্যাপার্টমেন্ট এবং হলিডে হোম এখানে উপলব্ধ।
জার্মানিতেও রয়েছে দারুণ কিছু সৈকত। ‘ওয়েস্টস্ট্রান্ড’ তেমনই একটি। রস্টক ও স্ট্রালসুন্ডের মাঝে বাল্টিক উপকূলের এই নয় মাইল দীর্ঘ সৈকতটি বালির টিলা এবং বনভূমি দ্বারা বেষ্টিত। এখানে শিল্পী এবং প্রকৃতির ছবি তোলার মানুষের আনাগোনা দেখা যায়। কাছেই ‘আর্টিস্টস’ কলোনি’তে বিভিন্ন কর্মশালাতেও অংশ নিতে পারেন।
এবার চলুন জার্মানির ‘ড্যুনে’ সৈকতে। ঐতিহাসিক এই দ্বীপে লাল পাথরের উঁচু পাহাড় এবং পাথুরে উপকূলের পাশেই রয়েছে চমৎকার একটি বালুকাময় সৈকত। এখানে গ্রীষ্মকালে সিল মাছের দেখা পাওয়া যায়।
কর্সিকার ‘কারাতাজ্জিও’ বিচ-এর স্বচ্ছ জলে ডুব দিতে পারেন, যা প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। বোট অথবা পায়ে হেঁটে যাওয়া যায় এই সৈকতে।
এবার তুরস্কের দুটি অসাধারণ বিচ-এর কথা বলা যাক। প্রথমটি হলো ‘কাবাক’, যা তুরস্কের একটি অসাধারণ সৈকত। এখানে রয়েছে যোগা সেন্টার, ক্যাম্পসাইট এবং নানান ধরনের বিশ্রামাগার। আর দ্বিতীয়টি হলো ‘ইনলিস’। পর্যটকদের ভিড় থেকে দূরে, স্থানীয়দের পছন্দের এই সৈকতটি তুরস্কের অন্যতম সুন্দর একটি জায়গা।
পোল্যান্ডের ‘নাজস্পোকোইনিয়েজসা প্লাজা’ সমুদ্র সৈকতটি যেন প্রকৃতির নীরবতা উপভোগ করার এক আদর্শ স্থান। এখানে সমুদ্রের পাশে বিচ ফরেস্ট-এর দৃশ্য মন জয় করে নেয়।
ইতালির ‘এরাক্লিয়া মিনোয়া’ সি বিচ-এর কাছেই রয়েছে প্রাচীন গ্রিক গ্রাম। সমুদ্রের পাশে পাইন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়ার মজাই আলাদা।
স্পেনের ‘এস গ্রাউ’ মেনোরকা-র শান্ত সমুদ্র সৈকত শিশুদের জন্য নিরাপদ। এখানকার অগভীর জলে কায়াকিং এবং প্যাডেলবোর্ডিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে।
স্পেনের ‘কালা এস্ট্রেটা’ সমুদ্র সৈকত পাথুরে হলেও, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। এখানকার পপ-আপ বার-এ নানা ধরনের পানীয় ও স্ন্যাকসের ব্যবস্থা রয়েছে।
ডেনমার্কের ‘লিসেলিজ’ উত্তর জিল্যান্ডের একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত। এখানকার নীল-সবুজ জল এবং পরিষ্কার বালুকণা এটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
ডেনমার্কের ‘ডুওড’ বিচ-এ সাদা বালির শান্ত পরিবেশে আপনি ছবি তোলার চমৎকার সুযোগ পাবেন।
সুইডেনের ‘স্কানোর হাভসবাদ’ -এর সাদা বালুকাময় সৈকত পরিবার এবং শিশুদের জন্য খুবই উপযোগী।
সুইডেনের ‘ফ্রেভিসোরেন’-এ আর্কটিক সার্কেলের কাছাকাছি একটি সৈকত অবস্থিত, যেখানে গ্রীষ্মকালে আপনি সাঁতার, মাছ ধরা, ক্যানো ভাড়া করা এবং দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ করতে পারেন।
নওয়ের ‘নর্ডহাসেলভিকা’ হল একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত, যেখানে পাখি দেখা যায়।
গ্রিসের ‘পসিলি আমোস’ বিচ-এ শান্ত ও মনোরম পরিবেশে সময় কাটানো যেতে পারে।
গ্রিসের ক্রিট-এ অবস্থিত ‘থোলোস’ বিচ-এ পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়।
নেদারল্যান্ডসের ‘কিকডুইন’ বিচ-এ কোলাহলমুক্ত পরিবেশে সমুদ্রের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।
নেদারল্যান্ডসের ‘ডি হর্স’ -এ বিশাল বালুকাময় প্রান্তরে পাখির ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে।
ইউরোপের এই অসাধারণ সমুদ্র সৈকতগুলো আপনার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে। তাই দেরি না করে, আজই আপনার ভ্রমণের পরিকল্পনা শুরু করুন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান