শিরোনাম: ইউক্রেন সংকট: ঐক্যের ফাটল, ট্রাম্পের ভূমিকায় রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে একটা ঐক্যের সুর শোনা গিয়েছিল, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সেই সুর কেটে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু মন্তব্যের কারণে রাশিয়ার প্রতি যেন কিছুটা নরম মনোভাব দেখা যায়। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শুরুতে, ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন চেয়েছিল রাশিয়া যেন এক মাসের জন্য যুদ্ধ বিরতি দেয়। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনও চেয়েছিল, বিশেষ করে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে। শোনা গিয়েছিল, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে এই পরিকল্পনার পক্ষে ছিলেন এবং রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। ইউক্রেনে নিযুক্ত ট্রাম্পের বিশেষ দূত এমনকি এই যুদ্ধ বিরতির পক্ষে মত দেন।
কিন্তু এরপরেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি এই প্রস্তাবের কোনো উল্লেখ না করে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেমলিনের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দ্রুত বৈঠকে বসার আহ্বান জানান।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে অনেকেই অবাক হয়েছেন। কারণ, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ট্রাম্প সম্ভবত এমনটা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ভূমিকায় রাশিয়া আরও বেশি সুবিধা পেতে পারে। প্রথমত, রাশিয়া ইউরোপ ও ইউক্রেনের প্রস্তাব সরাসরি এড়িয়ে যেতে পারল। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার উপর বড় ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞাও চাপানো হয়নি, যা ইউরোপ চেয়েছিল। তৃতীয়ত, ট্রাম্পের ইস্তাম্বুলে আলোচনার প্রস্তাব রাশিয়ার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
বর্তমানে, ইস্তাম্বুলে এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মধ্যে বিদ্যমান তীব্র বিরোধের কারণে এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনেকের মতে, এই বৈঠক শান্তি প্রতিষ্ঠার বদলে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চান না। তবে, এর ফলে ইউরোপ ও ইউক্রেনকে হয়তো একাই এই সংকট মোকাবেলা করতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন সংকট বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও পরিবর্তন আসতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন