ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নতুন পরিকল্পনা করছেন। তার এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম কমানো।
এক্ষেত্রে তিনি অন্য দেশগুলোতে ওষুধের দামের সঙ্গে তুলনা করে একটি ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন’ নীতি চালুর কথা বলছেন। এই নীতির মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্র সেই দামেই ওষুধ কিনবে, যে দামে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে তা বিক্রি হয়।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে, বিভিন্ন দেশে ওষুধের দামের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এর ফলে বিশ্বজুড়ে ওষুধের দাম বাড়তে পারে।
কারণ, প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো তাদের লাভ বজায় রাখতে দাম সমন্বয় করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওষুধের দাম অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
একটি সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম, অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় প্রায় ২.৭৮ গুণ বেশি ছিল। ব্র্যান্ডেড ওষুধের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য আরও বেশি, যা প্রায় ৩.২২ গুণ পর্যন্ত ছিল।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, তা সরাসরি দেশটির স্বাস্থ্যখাতে প্রভাব ফেলবে। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক বাজারেও এর একটি প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
তবে, এই ধরনের নীতি আগেও চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তা বেশিদূর এগোতে পারেনি। এমনকি, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এই নীতি বাতিল করেছিলেন।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দর কষাকষি করারও ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
ট্রাম্পের এই নতুন প্রস্তাব সেই প্রচেষ্টাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তবে, এর ফল কত দ্রুত পাওয়া যাবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই উদ্যোগ সফল হলে, তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে ওষুধের দামের ক্ষেত্রেও একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, সেখানে ওষুধের দামের এই পরিবর্তন বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, ওষুধের দাম বাড়লে, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন