বিশ্ব বাজারে খাদ্যপণ্যের দামে অস্থিরতা : বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা
বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দামের উত্থান-পতন একটি নিয়মিত ঘটনা। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যপণ্যের দামে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তা বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা কিভাবে আমাদের দেশের বাজারে খাদ্যপণ্যের দামকে প্রভাবিত করতে পারে, সেই বিষয়ে এটি একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ অতিমারীর পর দেখা যায় খাদ্যপণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর পেছনে ছিল একদিকে যেমন সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত, তেমনই ছিল মুদ্রাস্ফীতি।
পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হতে শুরু করলেও, নতুন কিছু কারণে খাদ্যপণ্যের দামে আবার অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
যেমন, বার্ড ফ্লু বা “এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা”-র কারণে ডিমের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এর দাম বাড়তে পারে।
সরকারি পূর্বাভাস অনুযায়ী, ডিমের দাম এ বছর ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও, মেক্সিকো এবং কানাডা থেকে আসা খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সম্ভাবনাও রয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য বাজারের ওপর প্রভাব ফেলবে।
এই দেশগুলো থেকে আসা খাদ্যপণ্য মার্কিন বাজারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দামের এই পরিবর্তন বিভিন্ন কারণের ফল।
এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রোগব্যাধি।
উদাহরণস্বরূপ, বার্ড ফ্লু-এর কারণে হাঁস-মুরগীর উৎপাদন কমে যাওয়ায় ডিমের দাম বাড়তে পারে।
আবার, কোনো দেশের বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের কারণে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা ভোক্তার পকেটকে সরাসরি প্রভাবিত করে।
বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়া জরুরি।
আমাদের দেশেও আন্তর্জাতিক বাজারের যেকোনো পরিবর্তনের প্রভাব পড়তে পারে।
যদি বিশ্ববাজারে কোনো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে, তবে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে দেশের বাজারেও।
তাই, আন্তর্জাতিক বাজারের গতিবিধির দিকে আমাদের সব সময় নজর রাখতে হবে।
একইসঙ্গে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে, স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
মোটকথা, বিশ্ব অর্থনীতির এই জটিল পরিস্থিতিতে খাদ্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা একটি স্বাভাবিক ঘটনা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারের যেকোনো পরিবর্তন একটি দেশের খাদ্যপণ্যের দামে প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে, আমাদের সচেতন থাকতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম