মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য একটি পদক্ষেপ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার বিষয়। কাতার থেকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বিমান উপহার হিসেবে গ্রহণ করার বিষয়টি এখন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এই বিমানটি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে এয়ার ফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহৃত হবে এবং মেয়াদ শেষে এটি ট্রাম্পের সংগ্রহশালায় স্থান পাবে।
এই ধরনের উপহার গ্রহণ করা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের গুরুতর কিছু ধারা লঙ্ঘন করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা রাজার কাছ থেকে পাওয়া উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু বিধি-নিষেধ রয়েছে।
সংবিধানের ‘এমোলিউমেন্টস ক্লজ’ অনুযায়ী, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা বিদেশি সরকার বা ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো উপহার বা সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন না। এই ধারার মূল উদ্দেশ্য হলো, বিদেশি রাষ্ট্রগুলো যেন কোনো মার্কিন নেতার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এই উপহার গ্রহণ করা হলে তা অভিশংসনযোগ্য অপরাধের শামিল হতে পারে।
আবার কারো মতে, এটি সরাসরি ঘুষ হিসেবে গণ্য না হলেও, একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে।
আগের মেয়াদেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এবারকার ঘটনাটি ভিন্ন।
কারণ, এক্ষেত্রে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক কোনো স্বার্থ জড়িত নেই। বিমানটি সরাসরি বিনামূল্যে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষা বিভাগ এই উপহার গ্রহণ করতে পারবে। যদিও কাতারের হয়ে লবিং করার অভিযোগ রয়েছে এমন একজন অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমোদন এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারকে এই বিমানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বোয়িং যখন নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান তৈরি করছে, সেই সময়ে কাতার থেকে পাওয়া এই বিমানটি প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্য একটি ভালো ‘অবদান’।
তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় কংগ্রেস সম্ভবত এই উপহার গ্রহণে বাধা দেবে না। অনেক সমালোচকের মতে, বিচার বিভাগের অনুমোদনের কারণে প্রেসিডেন্টকে জবাবদিহি করা কঠিন হয়ে পড়বে।
সব মিলিয়ে, কাতার থেকে পাওয়া এই বিমানের বিষয়টি মার্কিন রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে এর আরও অনেক দিক উন্মোচিত হবে এবং এর প্রভাব সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা