যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত অস্ট্রেলীয় সেনার মানহানির মামলায় আপিল খারিজ করে দিয়েছে দেশটির আদালত। দেশটির ফেডারেল কোর্ট শুক্রবার বেন রবার্টস-স্মিথের করা আপিলটি প্রত্যাখ্যান করে, যিনি আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালনকালে যুদ্ধাপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই মামলায় রবার্টস-স্মিথের সম্মানহানির অভিযোগ আনা হয়। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে প্রকাশিত কিছু সংবাদপত্রে রবার্টস-স্মিথের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা মূলত সত্য।
২০১৬ সালে এক বিচারক এই রায় দেন এবং সেই রায়ে রবার্টস-স্মিথকে চারজন নিরস্ত্র আফগান বন্দীকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয়। যদিও রবার্টস-স্মিথ বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
আফগানিস্তানে অস্ট্রেলীয় সেনাদের যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি বেশ কয়েক বছর ধরেই আলোচনায় রয়েছে। এর আগে, ২০২০ সালে প্রকাশিত একটি সামরিক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলীয় সেনারা ৩৯ জন আফগান বন্দী ও বেসামরিক নাগরিককে বেআইনিভাবে হত্যা করেছে।
ওই প্রতিবেদনে ১৯ জন বর্তমান ও প্রাক্তন সেনার বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ করা হয়। তবে রবার্টস-স্মিথ তাদের মধ্যে ছিলেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে রবার্টস-স্মিথকে এখন মামলার খরচ হিসেবে প্রায় ২৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা) পরিশোধ করতে হতে পারে। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন।
অভিযোগ রয়েছে, রবার্টস-স্মিথ এক আফগান বেসামরিক নাগরিককে একটি পাহাড় থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন এবং তার অধীনস্থদের নির্দেশ দেন গুলি করার জন্য। এছাড়াও, তাঁর বিরুদ্ধে এক কৃত্রিম পা-ওয়ালা ব্যক্তিকে মেশিনগান দিয়ে হত্যা করার অভিযোগও রয়েছে।
এই মামলায় পত্রিকাগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই রায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য একটি বড় জয়।
আফগানিস্তানে দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে তালিবান ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রায় ৩৯,০০০ অস্ট্রেলীয় সেনা অংশ নিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা