গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, নিহত অন্তত ৭৫।
গাজা, ফিলিস্তিন – গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। রবিবার পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গেছে, গত রাতে ও ভোরে হওয়া হামলায় অন্তত ৭৫ জন নিহত হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাজার বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে খান ইউনিস, জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এবং দেইর আল-বালাহ-এর মত জনবহুল এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের আক্রমণ তীব্র করেছে। এসব হামলায় ঘরবাড়ি, উদ্বাস্তু শিবির ও আশ্রয়কেন্দ্রে বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। খান ইউনিসে বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হামলার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, অনেক মরদেহ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়িতে হামলায় একই পরিবারের ৯ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। দেইর আল-বালাহ-তে একটি বাড়িতে হামলায় নিহত হয়েছে দুই বাবা-মা ও তাদের এক সন্তান।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এসব হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে জানা গেছে, তারা ‘গিডিয়ন’স চ্যারিয়টস’ নামে একটি নতুন অভিযান শুরু করেছে। ইসরায়েল বলছে, তাদের লক্ষ্য হলো হামাসকে আলোচনার টেবিলে আনতে চাপ সৃষ্টি করা। যদিও হামাস চাইছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের সমাপ্তি।
এদিকে, গাজায় যখন ইসরায়েলি অভিযান চলছে, তখন ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরাও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। রবিবার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা একটি হুতি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। হুতি বিদ্রোহীরা তাদের ছোড়া দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির ছিল বলে দাবি করেছে।
গাজায় এই যুদ্ধ গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে শুরু হয়েছে। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালালে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় এ পর্যন্ত ৫৩,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের পরেই ইসরায়েল এই নতুন অভিযান শুরু করেছে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস