শিরোনাম: ভ্রমণের সময় বমি ভাব? কারণ ও প্রতিকার
প্রায়ই কি ভ্রমণের সময় বমি বমি লাগে? গাড়িতে উঠলেই মাথা ঘোরে? এমন সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের জন্য আজকের এই লেখা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, বিশেষ করে লম্বা বাস জার্নি, লঞ্চ অথবা নৌকায় ভ্রমণে এই সমস্যা অনেকেরই হয়।
এর কারণ, লক্ষণ, এবং কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আসলে, গতিজনিত অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস (Motion Sickness) একটি সাধারণ সমস্যা। এর মূল কারণ হলো, আমাদের শরীর যখন চলে, তখন আমাদের চোখ, ভেতরের কান (vestibular system), এবং শরীরের অন্যান্য সংবেদী অঙ্গ (proprioception) – এই তিনটির মধ্যে সমন্বয় না হওয়া।
উদাহরণস্বরূপ, গাড়িতে বসে বাইরের দৃশ্য না দেখে যদি আপনি বই পড়েন, তাহলে আপনার চোখ স্থির দেখবে, কিন্তু আপনার ভেতরের কান অনুভব করবে গাড়ির চলমান গতি। এই দুইয়ের মধ্যেকার অমিলই মস্তিষ্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, যার ফলস্বরূপ বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, এমনকি বমি পর্যন্ত হতে পারে।
লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড সাইকোলজির অধ্যাপক ড. জন গোল্ডিংয়ের মতে, মোশন সিকনেস একটি সাধারণ শব্দ যা সমুদ্র যাত্রা, আকাশ যাত্রা এবং গাড়িতে ভ্রমণের সময় হওয়া অসুস্থতাকে বোঝায়।
মোশন সিকনেসের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিষয় মোশন সিকনেসের সম্ভাবনা বাড়ায়। যেমন, যাদের বয়স কম, বিশেষ করে ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এছাড়াও, মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হতে দেখা যায়।
তাহলে, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?
টরন্টো মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বেহরং কেশাভার্জ-এর মতে, যারা গাড়ির চালকের গতিবিধি অনুসরণ করে, তাদের মোশন সিকনেস কম হয়।
মনে রাখবেন, মোশন সিকনেস কোনো দুর্বলতা নয়। এটি একটি শারীরিক প্রক্রিয়া, যা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে। তাই, এই সমস্যা হলে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।
সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আপনি আপনার ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান