মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ দেশটির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং পুলিশ সংস্কার সংক্রান্ত চুক্তিগুলো বাতিল করতে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে জর্জ ফ্লয়েড এবং ব্রিয়ানা টেইলরের মৃত্যুর পর পুলিশি অপকর্মের প্রতিকারে গৃহীত পদক্ষেপগুলো কার্যত স্থগিত হয়ে গেল।
বিচার বিভাগের নাগরিক অধিকার বিভাগের প্রধানের ঘোষণা অনুযায়ী, এই পদক্ষেপ মূলত এমন সব চুক্তির বিরোধিতা করে, যা পুলিশ বিভাগের সংস্কারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে বিচার বিভাগ অসদাচরণের প্রমাণ পেয়েছিল। ‘কনসেন্ট ডিক্রি’ নামে পরিচিত এই চুক্তিগুলো হলো ফেডারেল সরকারের সঙ্গে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের একটি সমঝোতা, যা আদালতের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়।
কোনো পুলিশ বিভাগের সংস্কার প্রয়োজন হলে, তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য এই ধরনের চুক্তি ব্যবহার করা হয়।
জানা গেছে, বিচার বিভাগ ফিনিক্স, অ্যারিজোনা, ট্রেন্টন, নিউ জার্সি, মেমফিস, টেনিসি এবং মাউন্ট ভারনন, নিউ ইয়র্কের স্থানীয় পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দিচ্ছে।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হারমিত ধিলন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “পুলিশের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় সম্প্রদায়ের ক্ষমতা হ্রাস করে, যা তাদের হাত থেকে তুলে নিয়ে এমন কর্মকর্তাদের হাতে দেয় যাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই এবং অনেক সময় তারা পুলিশের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করে।”
এই সিদ্ধান্তের ফলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এর ফলে পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার আরও বাড়তে পারে এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য আরও তীব্র হতে পারে।
জর্জ ফ্লয়েড এবং ব্রিয়ানা টেইলরের মৃত্যুর পর পুলিশের সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, এই পদক্ষেপ সেই আন্দোলনের প্রতি একটি বড় আঘাত। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এর মাধ্যমে পুলিশ বিভাগের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচিত হচ্ছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল মনে করে, এটি মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের পরিপন্থী।
তারা এই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে, এই ঘটনার পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। খবরটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এর আরও তথ্য জানানো হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।