নিউ অরলিন্স, যুক্তরাষ্ট্র – নিউ অরলিন্সের একটি কারাগারে বন্দী দশজন আসামীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি চলছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সেখানকার এক কারাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঐ কর্মীর দাবি, পালিয়ে যেতে সহায়তা না করলে এক বন্দী তাকে ছুরিকাঘাত করার হুমকি দিয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারারক্ষী স্টার্লিং উইলিয়ামস (৩৩) নামে ঐ কর্মীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১০টি সাধারণ পলায়নে সহায়তা এবং ১টি সরকারি দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রতিটি অভিযোগের জন্য তার জামিনের পরিমাণ ধরা হয়েছে এক লক্ষ মার্কিন ডলার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত উইলিয়ামস জানিয়েছেন, পালানোর পরিকল্পনা করা বন্দীদের মধ্যে আন্তোইন ম্যাসি নামের একজন তাকে ছুরি মারার হুমকি দেয়। ম্যাসি তাকে বাথরুমের পানি বন্ধ করতে বলে, যা একটি গোপন পথ তৈরি করতে সাহায্য করে।
বাথরুমের এই ব্যবস্থাটি ভেঙ্গে ফেললে কারাকক্ষের দেয়ালের একটি গোপন ছিদ্র উন্মোচিত হয়। এই পথ ব্যবহার করেই দশজন বন্দী পালিয়ে যায়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া বন্দীরা একটি দুর্বল সেলের দরজা খুলে এবং টয়লেটের পেছনের লোহার পাত কেটে পালিয়ে যায়। তাদের পালানোর পরে, সেলের দায়িত্বে থাকা একমাত্র প্রহরী খাবার আনতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।
এছাড়া, কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, কারণ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আসতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লেগেছিল।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামীদের মধ্যে এখনো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
এদের মধ্যে অনেকে গুরুতর অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ছিল। এদের মধ্যে একজন হলেন কোরি বয়েড (১৯)। তাকে এপ্রিল মাসের একটি গাড়ী ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনার জেরে নিউ অরলিন্সের শেরিফ সুসান হাটসন তার আসন্ন পুনর্নির্বাচন প্রচারণা স্থগিত করেছেন। তিনি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিয়েছেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শেরিফ সুসান হাটসন এক বক্তব্যে বলেন, “আমাদের কর্মীদের মধ্যে যারা এই কাজে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, কারাগারের জনবল সংকট রয়েছে এবং বর্তমানে কর্মীর সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের খোঁজে এখনো ব্যাপক তল্লাশি চলছে। স্থানীয় পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো পলাতক আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
যাদের আশ্রয় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাদের সম্পর্কেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)