যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিশ্বজুড়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। তিনি প্রায়ই ‘শুল্ক’ শব্দটিকে তার অন্যতম প্রিয় শব্দ হিসেবে উল্লেখ করতেন।
বিভিন্ন সময়ে তিনি বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন এবং কিছু পণ্যের ওপর উচ্চ হারে আমদানি কর বসিয়েছেন। এমনকি, আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এই শুল্কনীতিগুলো সব সময় একই রকম ছিল না। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে শুল্কের হার দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুল্ক কমানো হয়েছে, আবার কোনো ক্ষেত্রে তা বাড়ানো হয়েছে।
তবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায় দেওয়ায় ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি তৈরির ক্ষমতা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে।
শুল্ক মূলত একটি দেশের সরকার কর্তৃক আমদানি করা পণ্যের ওপর ধার্য করা কর। এর মাধ্যমে একটি দেশ তার নিজস্ব শিল্পকে সুরক্ষা দিতে এবং আমদানি কমাতে চায়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো দেশ অন্য দেশ থেকে আসা স্টিলের ওপর শুল্ক আরোপ করে, তাহলে সেই স্টিলের দাম বেড়ে যাবে এবং দেশের স্থানীয় স্টিল কোম্পানিগুলো কিছুটা সুবিধা পাবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করা। তিনি প্রায়ই বলতেন, বিদেশি পণ্যের কারণে আমেরিকান শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তাই তিনি বিদেশি পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করে দেশীয় পণ্যের বাজারকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন।
তবে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হন।
বর্তমানে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতিগুলো কিভাবে পরিবর্তিত হবে, সে বিষয়ে এখনও অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের রায় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই শুল্কনীতিগুলো শুধু যুক্তরাষ্ট্রকে নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
এই নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে, তবে তা আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
আবার, অন্য কোনো দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে, সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নতুনভাবে সাজানোরও সুযোগ তৈরি হতে পারে। তাই, বাংলাদেশের জন্য এই শুল্কনীতির পরিবর্তনগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
তথ্য সূত্র: CNN