চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি: একটি নতুন দিগন্তের সূচনা?
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী সোমবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠকে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক কেভিন হ্যাসেল্ট এই বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হল, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিরল খনিজ পদার্থের সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা। এই খনিজ পদার্থগুলি মূলত ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে এপ্রিল মাসের আগের অবস্থায় এই সরবরাহ ফিরিয়ে আনতে।
আগের চুক্তি অনুযায়ী, চীন কিছু মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক হ্রাস করতে রাজি হয়েছিল। এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্রও চীনের কিছু পণ্যের উপর শুল্কের বোঝা কমিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়, যা বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তোলে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি এবং কোষাধ্যক্ষ সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা লন্ডনের বৈঠকে অংশ নেবেন। এই বৈঠকের দিকে এখন বিশ্ব অর্থনীতির নজর রয়েছে।
মার্কিন অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করেন, শুল্কের কারণে একদিকে যেমন মূল্যস্ফীতি কমেছে, তেমনই সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। এপ্রিল মাসে শুল্ক বাবদ প্রায় ১৬.৩ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় অনেক বেশি। এই বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হলে, তা উভয় দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, বাণিজ্য চুক্তির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব কেমন হবে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এই চুক্তির ফলে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। অন্যদিকে, কেউ কেউ মনে করেন, শুল্কের কারণে বাণিজ্য খরচ বাড়তে পারে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের উপর প্রভাব ফেলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারেও এই বাণিজ্য চুক্তির প্রভাব পড়তে পারে। বিভিন্ন মহল মনে করছে, এই চুক্তির ফলে মার্কিন সরকারের ঋণ এবং ঘাটতি কিছুটা হলেও কমতে পারে। তবে, দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে।
সব মিলিয়ে, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই চুক্তির ফলাফল একদিকে যেমন দুই দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে, তেমনই বিশ্ব বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ গতিপথও অনেকাংশে এর উপর নির্ভরশীল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন