যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির দুই বৃহৎ মর্টগেজ সংস্থা, ফ্যানি ম্যা এবং ফ্রেডি ম্যাক-কে সম্ভবত খুব শীঘ্রই সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
এমনটা হলে, এই সংস্থাগুলোর শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কিছু হেজ ফান্ড বিপুল মুনাফা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে এর ফলে সাধারণ মানুষের জন্য বাড়ির ঋণ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
ফ্যানি ম্যা এবং ফ্রেডি ম্যাক-এর কাজ হলো— ঋণ প্রদানকারীদের কাছ থেকে মর্টগেজ কিনে সেগুলোকে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত করা। এর মাধ্যমে তারা আবাসন খাতে অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করে এবং সম্ভাব্য ক্রেতাদের জন্য ঋণের সুদের হার কমাতে সহায়তা করে।
বর্তমানে, এই দুটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি মর্টগেজের নিশ্চয়তা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দুটি কোম্পানিকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। যদিও এর আগে তার এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি, তবে এবার অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন, তিনি সফল হতে পারেন।
এরই মধ্যে, ফ্যানি ম্যা এবং ফ্রেডি ম্যাক-এর শেয়ারের দাম বেড়েছে। তবে, এই পদক্ষেপের ফলে বাড়ির ক্রেতাদের জন্য ঋণের খরচ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি এই দুটি কোম্পানির ওপর থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকি এড়াতে সুদের হার বাড়াতে পারে। এমনটা হলে, স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বাড়ি কেনা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির ফলে কিছু হেজ ফান্ড বিপুল লাভের সুযোগ পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যানের মালিকানাধীন পার্সিং স্কয়ার ক্যাপিটালের মতো হেজ ফান্ডগুলো ফ্যানি ম্যা এবং ফ্রেডি ম্যা-তে বড় বিনিয়োগ করেছে।
২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সময় যখন এই কোম্পানিগুলো প্রায় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল, তখন সরকার তাদের সহায়তা করে। অ্যাকম্যানসহ অন্যান্য বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই কোম্পানিগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছেন।
তবে, এই পদক্ষেপের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। ডেমোক্রেট দলের সিনেটররা আশঙ্কা করছেন, এই পরিবর্তনের ফলে সাধারণ মানুষের চেয়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বেশি দেখা হবে।
এছাড়া, বর্তমানে বিদ্যমান কাঠামোর অধীনে কোম্পানিগুলোকে বাজারে ছাড়লে তা ২০০৮ সালের সংকটের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি এই দুটি কোম্পানির দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মর্টগেজ-সংক্রান্ত বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
এই মুহূর্তে, ফ্যানি ম্যা এবং ফ্রেডি ম্যা-এর শেয়ারে বিনিয়োগ করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ, কোম্পানি দুটিকে সরকারের কাছে বিশাল অঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
তাই, শেয়ারহোল্ডাররা তাদের বিনিয়োগের পুরোটা ফেরত নাও পেতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন