যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা কমায় মে মাসে মার্কিন ভোক্তাদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, জিনিসপত্রের দাম এবং চাকরির বাজার নিয়ে আমেরিকানদের ধারণা আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে।
এর ফলে, আগামী এক বছরের জন্য মূল্যস্ফীতি (inflation) নিয়ে তাদের প্রত্যাশা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
জরিপে প্রকাশ, মে মাসে ভোক্তাদের প্রত্যাশা ছিল, আগামী এক বছরে মূল্যস্ফীতি কমে ৩.২ শতাংশে দাঁড়াবে। এর আগে, এই হার ছিল ৩.৬ শতাংশ।
নভেম্বরের ২০২২ সালের পর, মূল্যস্ফীতি হ্রাসের ক্ষেত্রে এটি ছিল সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। উল্লেখ্য, সে সময় অপ্রত্যাশিতভাবে মূল্যবৃদ্ধির গতি কমে গিয়েছিল এবং ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক কয়েক দশক ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে শুল্ক (tariff) বাড়লে ভোক্তাদের জন্য জিনিসপত্রের দামও বাড়বে। তবে, এর প্রভাব কতটা হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
কারণ, শুল্কের হার এবং বাণিজ্য আলোচনার অনিশ্চয়তার কারণে বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যা ভোক্তাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তারা শুধু উচ্চ মূল্য নিয়েই চিন্তিত নন, বরং চাকরি হারানোর আশঙ্কাও করছেন।
তবে, মে মাসের জরিপে দেখা গেছে, ভোক্তাদের মধ্যে এই উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। বর্তমানে, দেশের বেকারত্বের হার (unemployment rate) বাড়তে পারে—এমন ধারণা করা মানুষের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০.৮ শতাংশে, যা আগের তুলনায় ৩.৩ শতাংশ কম।
এছাড়া, চাকরি হারানোর সম্ভবনাও কমেছে, যা ০.৫ শতাংশ কমে ১৪.৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, চাকরি হারালে নতুন চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আগের চেয়ে বেড়েছে। এমনকি, পরিবারের আয়ও সামান্য বাড়তে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন।
তাদের মতে, পরিবারের আয়ের গড় বৃদ্ধি হতে পারে ২.৭ শতাংশ।
ভোক্তাদের আর্থিক অবস্থার প্রত্যাশার উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে ক্রেডিট পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি এবং ঋণ পরিশোধে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস অন্যতম।
তবে, ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের একটি বিষয় এখনো বিদ্যমান। তা হলো খাদ্যপণ্যের দাম।
জরিপে দেখা গেছে, আগামী এক বছরে খাদ্যপণ্যের দাম ৫.৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা অক্টোবর ২০২৩-এর পর সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির এই ইতিবাচক চিত্র বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর প্রভাব বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর পড়ে।
যদিও, এর সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নাও পড়তে পারে, তবে বিশ্ব অর্থনীতির গতিবিধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদেরও প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN