ব্রাজিলের মাংস প্রক্রিয়াকরণ জায়ান্ট জেবিএস-এর শেয়ার নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে (এনওয়াইএসই) তালিকাভুক্ত হওয়ার পরেই দরপতন হয়েছে। শুক্রবার শেয়ার বাজারে প্রবেশের প্রথম দিনেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬ শতাংশ কমে যায়।

মাংস শিল্পের এই বৃহৎ কোম্পানির জন্য নিউ ইয়র্কে তালিকাভুক্তির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল।

জেবিএস-এর ব্যবসার একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কোম্পানিটির বার্ষিক আয়ের অর্ধেক আসে এই দেশ থেকে।

এখানে তাদের ৭২ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করে। জেবিএস আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় গরুর মাংস উৎপাদনকারী এবং পোল্ট্রি ও শুকরের মাংস উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্তের আগে, জেবিএস-এর সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডাররা সাও পাওলো এবং নিউ ইয়র্কে কোম্পানির শেয়ার তালিকাভুক্তির পক্ষে ভোট দেন। এর ফলে পরিবেশবাদী সংগঠন, মার্কিন আইনপ্রণেতা এবং অন্যান্য সমালোচকদের বিরোধিতা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।

সমালোচকরা জেবিএস-এর দুর্নীতি, একচেটিয়া বাণিজ্য এবং পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ তুলেছিলেন।

জেবিএস কর্তৃপক্ষের মতে, দ্বৈত তালিকাভুক্তির ফলে তারা বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও সহজে পৌঁছাতে পারবে এবং ব্যবসার প্রসারের জন্য প্রতিযোগিতামূলক সুদের হারে ঋণ সংগ্রহ করতে পারবে।

তারা আরও জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তালিকাভুক্তির কারণে নিয়ন্ত্রকদের আরও বেশি নজরদারির মধ্যে থাকতে হবে। মার্কিন সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) গত মাসে জেবিএস-এর তালিকাভুক্তির পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

তবে এই তালিকাভুক্তির প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জোরালো আপত্তিও উঠেছিল। পরিবেশবাদী সংগঠন মাইটি আর্থ (Mighty Earth) নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ বোর্ডকে চিঠি দিয়ে তালিকাভুক্তি প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছিল।

তাদের অভিযোগ ছিল, জেবিএস ব্রাজিলের বনভূমি ধ্বংস করে অবৈধভাবে লাভ করছে।

এছাড়াও, প্রভাবশালী বিনিয়োগ পরামর্শক সংস্থা গ্লাস লুইসও (Glass Lewis) জেবিএস-এর শেয়ারহোল্ডারদের তালিকাভুক্তির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যানের পরামর্শ দিয়েছিল। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জেবিএস বোর্ডে জোয়েসলি এবং ওয়েসলি বাতিস্তার (কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতার ছেলে) পুনরায় ফিরে আসা বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত।

উল্লেখ্য, এই দুই ভাই ২০১৭ সালে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্রাজিলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কারাবন্দী ছিলেন। গ্লাস লুইস কোম্পানির দ্বৈত শেয়ার কাঠামোরও বিরোধিতা করেছিল, যা বাতিস্তা পরিবার এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক শেয়ারহোল্ডারদের বেশি ভোটাধিকার দেবে।

জেবিএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শেয়ারহোল্ডারদের এই সিদ্ধান্তে তারা খুশি, কারণ এর মাধ্যমে দ্বৈত তালিকাভুক্তির সুবিধা সম্পর্কে তাদের আস্থা প্রমাণিত হয়েছে।

তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।