যুক্তরাষ্ট্রের একটি খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে বড় ধরনের সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে।
সাইবার হামলার শিকার হওয়া ইউনাইটেড ন্যাচারাল ফুডস ইনকর্পোরেটেড (UNFI) নামের এই কোম্পানিটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় সুপারমার্কেট চেইন হোল ফুডসের প্রধান খাদ্য সরবরাহকারী।
জানা গেছে, গত ৫ই জুন UNFI’র তথ্য প্রযুক্তি সিস্টেমে কিছু ‘অননুমোদিত কার্যক্রম’ ধরা পড়ে। এর পরেই তারা তাদের কিছু সিস্টেম বন্ধ করে দেয় এবং বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা চেয়েছে এবং সাইবার হামলার কারণে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সাময়িক ব্যাঘাত ঘটছে।
UNFI মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, যা বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য তৈরি ও সরবরাহ করে থাকে। এই কোম্পানির মাধ্যমে ৩০,০০০ এর বেশি মুদি দোকানে খাদ্য সরবরাহ করা হয়, যার মধ্যে হোল ফুডসও অন্তর্ভুক্ত।
হোল ফুডস-এর পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে Reddit-এ, হোল ফুডসের কিছু গ্রাহক তাদের দোকানের তাকগুলোতে খাদ্যশূন্যতা লক্ষ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন। একটি পোস্টে দেখা গেছে, একটি খালি রেফ্রিজারেটরের ওপর একটি সাইনবোর্ড ঝুলছে, যেখানে লেখা আছে, ‘কিছু পণ্যের সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।’
এছাড়া, দোকানে পণ্য সরবরাহের পরিমাণও স্বাভাবিকের চেয়ে কম দেখা গেছে বলে জানা গেছে।
গত বছর UNFI এবং হোল ফুডসের মধ্যে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ২০৩২ সাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে সরবরাহ সম্পর্ক বহাল রাখবে।
এমন পরিস্থিতিতে সাইবার হামলার কারণে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা উদ্বেগের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক বিশ্বে সাইবার নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে ব্যাংক, এমনকি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগেও সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে।
এই ধরনের ঘটনাগুলো বিশ্ব অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
এই ঘটনার জেরে, UNFI’র শেয়ারের দাম ৯ শতাংশের বেশি কমে গেছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতির সমান।
কোম্পানিটি তাদের সরবরাহকারী এবং ক্লায়েন্টদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যাতে করে সম্ভাব্য বিঘ্নগুলি কমানো যায়।
বাংলাদেশেও বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়। দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রায়ই সাইবার হামলার শিকার হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে এবং জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN