ভাষা ব্যবহারের এক বিশাল বিশ্লেষণ: অনলাইনে ইংরেজি ভাষার জগতে গালিগালাজের প্রবণতা
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় অনলাইনে ব্যবহৃত ভাষার এক বিশাল বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেখানে ইংরেজি ভাষাভাষী বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে গালিগালাজের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এই গবেষণায় প্রায় ১.৭ বিলিয়ন শব্দ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, বিভিন্ন অঞ্চলে ভাষার ব্যবহারের ধরন ভিন্ন।
এই বিশ্লেষণের মূল লক্ষ্য ছিল, ইন্টারনেটে মানুষ কীভাবে তাদের আবেগ প্রকাশ করে এবং কোন ধরনের শব্দ ব্যবহার করে থাকে।
গবেষকরা মূলত ২০টি ইংরেজি ভাষাভাষী অঞ্চলের ডেটা সংগ্রহ করেন। এই ডেটার মধ্যে ছিল সংবাদ নিবন্ধ, বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইট, সরকারি প্রকাশনা এবং ব্লগ।
এই বিশাল ডেটাবেসে ব্যবহৃত শব্দগুলোর মধ্যে বিশেষ কিছু শব্দ এবং তাদের বিভিন্ন রূপ চিহ্নিত করা হয়, যা সাধারণত “গালি” হিসেবে পরিচিত। এই গবেষণায় প্রায় ৫৯৭ ধরনের গালি শব্দ খুঁজে পাওয়া গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অনলাইনে গালিগালাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। সাধারণভাবে, আমেরিকান এবং ব্রিটিশরা অনলাইনে তুলনামূলকভাবে বেশি গালি ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার মানুষেরা হয়তো বাস্তবে বেশি গালি ব্যবহার করে, তবে অনলাইনে তাদের এই প্রবণতা কিছুটা কম দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা মনে করেন, অনলাইনে মানুষের ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি প্রকাশের স্বাধীনতা বেশি থাকে।
গবেষণায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। তা হলো, বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ নির্দিষ্ট কিছু গালি শব্দ ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে।
উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকানরা একটি বিশেষ শব্দ এবং তার বিভিন্ন রূপ ব্যবহার করতে পছন্দ করে, যা শরীরের একটি অংশকে নির্দেশ করে। অন্যদিকে, ব্রিটিশরা অন্য একটি শব্দের প্রতি বেশি ঝোঁক দেখায়। এই ধরনের পার্থক্যগুলো ভাষার ব্যবহারের সাংস্কৃতিক ভিন্নতা নির্দেশ করে।
এই গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, যেসব অঞ্চলে ইংরেজি ভাষা প্রধান ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেখানকার মানুষেরা তুলনামূলকভাবে বেশি গালি ব্যবহার করে এবং তাদের শব্দভাণ্ডারে বৈচিত্র্যও বেশি থাকে।
তবে, সিঙ্গাপুরের উদাহরণ এক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন। সিঙ্গাপুরে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার বাড়ছে এবং সেখানকার তরুণ প্রজন্ম তাদের নিজস্বতা প্রকাশ করতে এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত জানাতে প্রায়শই গালি ব্যবহার করে থাকে।
গবেষকরা মনে করেন, ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে গালিগালাজকে সাধারণত এড়িয়ে যাওয়া হয়। তাই, ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে জানার পরেও অনেক সময় মানুষজন এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করতে দ্বিধা বোধ করে।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল, ভাষার এই দিকটি মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, তা তুলে ধরা। গালিগালাজ শুধু অভদ্রতা নয়, বরং এটি মানুষের আবেগ প্রকাশ, কৌতুক সৃষ্টি এবং অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে।
ভাষার এই দিকটি সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবর্তন হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন