সাইবার হামলার শিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সুপারমার্কেটে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এর ফলস্বরূপ, দোকানগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকটের চিত্র।

ভোক্তাদের মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ, সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও।

যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা সুপারমার্কেট চেইন হোল ফুডসের খাদ্য সরবরাহকারী প্রধান প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ন্যাচারাল ফুডস (UNFI)। গত সপ্তাহে এই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে একটি বড় ধরনের সাইবার হামলা হয়।

এর ফলে খাদ্য সরবরাহ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমনটাই জানা গেছে। এই ঘটনার জেরে, হোল ফুডসের অনেক দোকানে তাকগুলো খালি হয়ে গেছে এবং গ্রাহকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ।

আর্কানসাসের একটি হোল ফুডস স্টোরের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তাদের ডিপার্টমেন্টে খাদ্য সরবরাহ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। সেখানকার ফ্রিজারগুলো এখন প্রায় খালি, রুটির সরবরাহও নেই।

কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। ক্যালিফোর্নিয়ার আরেকটি স্টোরের কর্মীর মতে, তাদের দোকানে নতুন করে কোনো অর্ডার নেওয়া বা প্রক্রিয়া করা যাচ্ছে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেক গ্রাহক খালি তাকের ছবি পোস্ট করেছেন এবং সরবরাহ সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

এই ঘটনার প্রভাব শুধু বৃহৎ কোম্পানিগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ছোট ছোট ব্যবসায়ী এবং বেকারি মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

ওহাইও রাজ্যের একটি বেকারি, প্যাটি কেইক বেকারির প্রতিষ্ঠাতা জেনি স্কাইনবাখ জানান, UNFI তাদের প্রধান সরবরাহকারী এবং সাইবার হামলার কারণে তারা তাদের প্রয়োজনীয় ভেগান বাটার সরবরাহ করতে পারছেন না।

এমনকি পরিস্থিতি সম্পর্কে UNFI কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।

এই ঘটনার পর, UNFI-এর শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। সোমবার শেয়ারের দাম ৭ শতাংশ এবং মঙ্গলবার ১০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়।

সাইবার হামলার বিষয়টি প্রকাশ করতে কেন এত দেরি হলো, সেই বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, সম্ভবত আগে থেকেই এই হামলার পূর্বাভাস ছিল। তবে, কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করছে এবং তাদের সিস্টেম পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছে।

এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলের দুর্বলতা এবং সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।

উন্নত দেশগুলোতে এমন ঘটনা ঘটলে, তার প্রভাব বিশ্বব্যাপী অনুভূত হয়। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদেরও এ ধরনের সাইবার নিরাপত্তা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল রক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন