যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক (ট্যারিফ) বসানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি।
এই পদক্ষেপগুলো তার আগের মেয়াদের তুলনায় বর্তমানে আরও বেশি অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই নতুন পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বেশ কিছু প্রভাব ফেলতে পারে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া।
উদাহরণস্বরূপ, যদি মেক্সিকো বা কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে সেই পণ্যের দাম বাড়বে এবং ভোক্তাদের পকেট থেকে বেশি খরচ হবে।
এছাড়াও, চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা ইতোমধ্যে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তুলবে।
আগের মেয়াদে ট্রাম্প যখন শুল্কের ঘোষণা দেন, তখন এর মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য ঘাটতি কমানো এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া।
যদিও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছিল, কিন্তু সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি তেমন বাড়েনি।
তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
বর্তমানে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, যা নতুন করে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা করলেও, শুল্কের কারণে হয়তো সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করতে হতে পারে, যার ফলে ঋণ ও সুদের হার বেড়ে যেতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, শুল্কের কারণে অন্য দেশগুলোও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে।
চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বসায়, তাহলে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষেরই অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে।
আমেরিকার একটি খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানি ‘বেসিক ফান’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীন থেকে খেলনা আমদানির ওপর শুল্ক বাড়লে তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি খেলনার দাম প্রায় ১০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কিছু কারণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটি বড় বাজার।
শুল্ক বাড়লে, রপ্তানি কমে যেতে পারে এবং দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়ন হলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি করবে এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস