পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো। ট্রাম্পের ‘খালটি পুনরুদ্ধারের’ দাবিকে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
সম্প্রতি, পানামা খালের উভয় প্রান্তে অবস্থিত বন্দর পরিচালনাকারী একটি চীনা গ্রুপের শেয়ার কেনার জন্য মার্কিন বিনিয়োগ সংস্থা ব্ল্যাকরক ইনক.-এর নেতৃত্বে একটি কনসোর্টিয়ামের সাথে চুক্তি হয়। ট্রাম্প এই চুক্তির সূত্রে দাবি করেন যে, তার প্রশাসন পানামা খাল ‘পুনরুদ্ধার’ করছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মুলিনো ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “পানামার স্বাধীনতা ও সত্যের প্রতি এটি নতুন আঘাত।” তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক লেনদেন।
পানামা খালের গুরুত্ব বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অপরিসীম। এটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। এর মাধ্যমে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হয় এবং সময় বাঁচে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও এই খালের গুরুত্ব অনেক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রেসিডেন্ট মুলিনোর সাথে সাক্ষাৎ করে খালের কার্যক্রমের ওপর চীনের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তবে পানামা সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, খালের কার্যক্রমে চীনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
প্রসঙ্গত, ১৯০০ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র এই খালটি নির্মাণ করে এবং ১৯৭৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পানামার কাছে এর নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে। ট্রাম্প অতীতে কার্টারের এই পদক্ষেপকে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এই চুক্তির বিষয়ে, হাচিসন পোর্ট হোল্ডিংসের কো-ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফ্রাঙ্ক সিক্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “এটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি, যা রাজনৈতিক খবরের সঙ্গে সম্পর্কহীন।” প্রায় ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই চুক্তিতে ব্ল্যাকরক কনসোর্টিয়াম হাচিসন পোর্ট হোল্ডিংস এবং হাচিসন পোর্ট গ্রুপ হোল্ডিংসের সমস্ত শেয়ার কিনবে। এই চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন এখনও পানামা সরকারের কাছ থেকে আসতে বাকি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস