স্পেসএক্স-এর স্টারশিপ রকেটের সর্বশেষ পরীক্ষা আবারও ব্যর্থ, মাঝ আকাশেই ভেঙে পড়ল যানটি।
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্স-এর তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী রকেট স্টারশিপের ৮ম পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন গত বৃহস্পতিবার টেক্সাস থেকে সম্পন্ন হয়। তবে উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং এটি ভেঙে যায়। এর আগে, প্রায় দুই মাস আগে হওয়া একটি বিস্ফোরণে আটলান্টিক মহাসাগরে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পরেছিল।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, উৎক্ষেপণের পর রকেটটির প্রথম অংশ সফলভাবে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এরপর স্টারশিপের উপরের অংশ, যেখানে মহাকাশযানটি ছিল, সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং ভেঙে যায়। ফ্লোরিডার আকাশে উড়ন্ত ধ্বংসাবশেষের ছবি পাওয়া গেছে।
পরীক্ষার সময় স্টারশিপ প্রায় ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) উচ্চতায় উঠেছিল। মহাকাশে পৌঁছানোর পর কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করার কথা ছিল, যা ভবিষ্যতের মিশনের জন্য একটি প্রস্তুতিস্বরূপ ছিল। স্টারশিপের এই ফ্লাইটটি এক ঘণ্টার জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে, অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে তা সম্পন্ন করা যায়নি।
স্পেসএক্সের একজন মুখপাত্র জানান, “দুর্ভাগ্যবশত, এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে, তাই আমরা এখন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
পরবর্তীতে স্পেসএক্স নিশ্চিত করেছে যে, রকেটটি “নিয়ন্ত্রণহীনভাবে দ্রুত ভেঙে” গেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে পূর্ব-পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
নাসার পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্টারশিপ ব্যবহার করে এই দশকের শেষের দিকে নভোচারীদের চাঁদে অবতরণ করানো হবে। এছাড়াও, স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী এলন মাস্কের লক্ষ্য হলো স্টারশিপের মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালানো।
এই পরীক্ষার জন্য স্টারশিপের ফ্ল্যাপ, কম্পিউটার এবং জ্বালানি ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করা হয়েছিল। আগের পরীক্ষায়, উৎক্ষেপণের পর বুস্টার সফলভাবে ফিরিয়ে আনা হলেও, মহাকাশযানটি আটলান্টিক মহাসাগরের উপরে বিস্ফোরিত হয়েছিল। সে ঘটনার কারণ হিসেবে জানা যায়, জ্বালানি লিক হয়ে যাওয়ার ফলে আগুন লেগে ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
স্পেসএক্স জানিয়েছে, তারা দুর্ঘটনার পর স্টারশিপের নকশার বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে এবং ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) পুনরায় স্টারশিপকে উৎক্ষেপণের অনুমতি দিয়েছে।
মহাকাশ প্রযুক্তির অগ্রগতি বিশ্বজুড়ে উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলোতে এর প্রভাব অনেক।
ভবিষ্যতে, স্পেসএক্স তাদের স্টারশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস