ফর্মুলা রাগবি দলের সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক রকি এলসমকে ক্লাব তহবিলের অর্থ আত্মসাতের দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ফ্রান্সের একটি আদালত। একইসঙ্গে, তাকে ১ লক্ষ ইউরোর (প্রায় ১ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার সমান) জরিমানা করা হয়েছে, যার অর্ধেক মওকুফ করা হয়েছে। জানা গেছে, এলসম বর্তমানে পলাতক এবং আদালতের শুনানিতেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।
৪২ বছর বয়সী রকি এলসম ২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ফরাসি রাগবি ক্লাব নারবোনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ক্লাবের তহবিল থেকে অবৈধভাবে অর্থ খরচ করেছেন। এই অভিযোগে তার বিচার চলছিল। যদিও জালিয়াতির অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন, তবে ক্লাবকে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এলসমের আইনজীবী অবশ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
আদালতে আইনজীবীর আবেদনের বিপরীতে সরকারি কৌঁসুলি এলসমের তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৬ লক্ষ ৩০ হাজার ইউরোর বেশি জরিমানার আবেদন করেছিলেন। গত বছর অক্টোবরেও এলসমকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেই শুনানিতেও অনুপস্থিত ছিলেন। সেই সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল।
রকি এলসম ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৭৫টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন এবং একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ২০০৯ সালে ডাবলিনের ক্লাব লেন্সটারের হয়ে তিনি হাইনেকেন কাপ জেতেন। মেলবোর্নে জন্ম নেওয়া এলসম বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছিলেন, তবে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
এলসম তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, তার নেতৃত্বে নারবোনে ক্লাবের ভালো ফল হয়েছিল এবং আর্থিক অবস্থাও স্থিতিশীল ছিল। তিনি বলেন, “ক্লাব লাভজনক ছিল, ভালো ফলাফল ছিল এবং ২০১৬ সাল পর্যন্ত তারা দ্বিতীয় বিভাগে (Pro D2) ছিল।” তিনি আরও বলেন, “মনে হচ্ছে, এই বিখ্যাত রাগবি ক্লাবের ভবিষ্যৎ দুর্নীতির জন্য আমাকে বলি বানানো হচ্ছে।” উল্লেখ্য, নারবোনে ক্লাবটি ১৯৩৬ ও ১৯৭৯ সালে ফরাসি রাগবি চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল। ২০১৮ সালে ক্লাবটি দেউলিয়া হয়ে যায় এবং বর্তমানে তৃতীয় বিভাগের লিগে খেলছে।
সাবেক এই রাগবি খেলোয়াড় ওয়ারাটা ও ব্রাম্বিসের হয়েও সুপার রাগবিতে খেলেছেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সময় তিনি ডাবলিনের একটি স্কুলে কোচের কাজ করতেন। একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আয়ারল্যান্ড তাকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠাতে পারে, এমন খবর জানার পরপরই তিনি শুধুমাত্র একটি ব্যাকপ্যাক নিয়ে পালিয়ে যান।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান