দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ইয়ুন সুক-ইওলকে কারামুক্ত করা হয়েছে, তবে তার বিরুদ্ধে এখনো চলমান বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
গত শনিবার দেশটির একটি আদালত ইয়ুনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করার পর প্রসিকিউটররা আপিল না করার সিদ্ধান্ত নিলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ডিসেম্বরের শুরুতে রাষ্ট্রপতি ইয়ুন সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিলে দেশের আইনপ্রণেতারা তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনেন।
এরপর থেকে তিনি তার দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত রয়েছেন এবং একই সাথে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও অভিশংসন প্রক্রিয়া চলছে।
শনিবার উইওয়াং শহরের ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ইয়ুনকে কোরীয় ও মার্কিন পতাকা হাতে সমর্থকদের অভিবাদন গ্রহণ করতে দেখা যায়।
কারামুক্তির পর দেওয়া এক বিবৃতিতে ইয়ুন বলেন, “কঠিন আবহাওয়া সত্ত্বেও যারা আমাকে সমর্থন জুগিয়েছেন, তাদের প্রতি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এর আগে শুক্রবার সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট কারিগরি ও আইনি কারণ দেখিয়ে ইয়ুনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করে।
সিউল ডিটেনশন সেন্টার নিশ্চিত করেছে যে তারা সিউলের প্রসিকিউটর অফিসের কাছ থেকে তাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ সম্বলিত একটি চিঠি পেয়েছে।
জানুয়ারি মাস থেকে ইয়ুনকে আটক করা হয়েছিল।
তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছিল, যেটির কারণে প্রেসিডেন্টের দায়মুক্তি পাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।
ইয়ুনের বিতর্কিত ডিক্রির কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়।
তিনি প্রথমে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেন এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের গণতন্ত্রের কেন্দ্রস্থলে পাঠান।
যদিও পরে আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টে জোর করে প্রবেশ করে তার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তিনি ছয় ঘণ্টার মধ্যে তা বাতিল করতে বাধ্য হন।
এরপর আইনপ্রণেতারা ইয়ুনকে অভিশংসিত করেন এবং এখন দেশটির সাংবিধানিক আদালত সিদ্ধান্ত নেবে যে তাকে স্থায়ীভাবে ক্ষমতা থেকে সরানো হবে, নাকি তিনি পুনর্বহাল হবেন।
তার অভিশংসন বিচার প্রক্রিয়াটি তার বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অভিযোগ থেকে আলাদা।
ইয়ুনের মুক্তি পাওয়ার ফলে এখন তিনি কারাবাসের পরিবর্তে বাড়িতে বসে অভিশংসনের রায় শোনার জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন, যা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আসার কথা রয়েছে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধী দলের নেতা লি জায়ে-মিয়ং শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, আদালতের এই রায়ে ইয়ুনকে “অসাংবিধানিক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ধ্বংস” করার অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া যায় না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন