মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র কানাডা থেকে আমদানি করা জ্বালানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দামে প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের মতো আমদানি-নির্ভর দেশগুলির জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলে পেট্রোলের দাম বাড়তে পারে। বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিম উপকূলের রাজ্যগুলোতে এর প্রভাব বেশি পড়তে পারে। যদিও এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রোলের দাম তুলনামূলকভাবে কম, তবে শুল্কের কারণে তা বাড়তে শুরু করলে ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি গ্যালন পেট্রোলের গড় দাম ৩.১১ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫১ টাকা)।
কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তেল সরবরাহকারী দেশ। গত বছর দেশটি প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে। মেক্সিকোও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী দেশ, যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ১৬৬ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আমদানি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির কারণে কানাডার তেল উৎপাদনকারীরা তাদের তেল অন্য কোথাও, যেমন ইউরোপ বা এশিয়ার বাজারে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে। এতে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ কমে যেতে পারে এবং দাম বাড়তে পারে। তবে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওপর অন্যান্য কারণও প্রভাব ফেলছে। ওপেক+ (OPEC+) সহ বিভিন্ন তেল উৎপাদনকারী দেশ উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কার কারণেও তেলের দামে পরিবর্তন আসতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে তেলের দামের পরিবর্তন বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ, যারা জ্বালানির জন্য আমদানি-নির্ভর, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তেলের দাম বাড়লে পরিবহন খরচ থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম—সবকিছুতেই প্রভাব পড়তে পারে। ফলে, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন