সোমালিয়ার একটি হোটেলে সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাবের হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (আজ) দেশটির মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত বেলেডওয়েইন শহরের কায়রো হোটেলে এই হামলা চালানো হয়।
জানা গেছে, ঘটনার সময় সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় আদিবাসী নেতারা সেখানে বৈঠকে বসেছিলেন।
হামলার পরপরই আল-শাবাব এক বিবৃতিতে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জঙ্গিরা প্রথমে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এরপর তারা হোটেলে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।
ঘটনার পর সোমালিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের তীব্র লড়াই শুরু হয় এবং খবর লেখা পর্যন্ত হোটেলটি তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকান কর্মচারী আলী সুলাইমান রয়টার্সকে জানান, তিনি প্রথমে একটি “বড় ধরনের বিস্ফোরণ” এবং তার পরেই “গুলির শব্দ” শুনতে পান।
তিনি আরও জানান, হোটেলের কিছু অংশ বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
আল-শাবাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা এই হামলায় ১০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে।
তবে, হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বেলেডওয়েইনের সংসদ সদস্য দাহির আমিন জেসোর বরাত দিয়ে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে “দুই জন প্রবীণ আদিবাসী নেতা” রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের গৃহযুদ্ধের পর সোমালিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয় এবং এর ফলস্বরূপ আল-শাবাবের জন্ম হয়।
আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই জঙ্গিগোষ্ঠী বিগত ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে সোমালিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আসছে।
তারা সোমালিয়া সরকারের পতন ঘটিয়ে নিজেদের কঠোর ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
আল-শাবাব প্রায়ই দেশটির সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়, তবে তাদের হামলায় প্রায়ই সাধারণ মানুষ হতাহত হয়।
সোমালিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলের কিছু অংশের নিয়ন্ত্রণ এখনও আল-শাবাবের হাতে রয়েছে।
সরকারি বাহিনী এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তিরক্ষী বাহিনীর অভিযানে রাজধানী মোগাদিসু থেকে তাদের বিতাড়িত করা হলেও, তারা এখনো দেশটির জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে বিদ্যমান।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা