মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক-এর কিছু পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে।
খবর অনুযায়ী, এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কাঠামোকে ব্যবসার মতো করে পরিচালনা করতে চাইছেন।
তাঁদের এই কৌশলের কারণে সরকারি বিভিন্ন খাতে কর্মী ছাঁটাই এবং সম্পদ বিক্রি হয়ে যেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দিতে পারে।
জানা গেছে, ট্রাম্প এবং মাস্ক উভয়েই বেসরকারি ব্যবসার জগৎ থেকে এসেছেন, যেখানে প্রধান নির্বাহীরা অনেকটা একচ্ছত্র আধিপত্য চালান এবং তাঁদের কাজের তেমন কোনো জবাবদিহিতা থাকে না।
তাঁদের এই ব্যবসায়িক মানসিকতা এখন দেশের প্রশাসনিক কাঠামোতেও প্রয়োগ করার চেষ্টা চলছে।
মাস্ক বিভিন্ন সময় সরকারি সংস্থাগুলিকে বেসরকারি খাতে দেওয়ার কথা বলেছেন, যেমন ইউএস পোস্টাল সার্ভিস এবং অ্যামট্রাক-এর মতো সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের পক্ষে তিনি মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসার অভিজ্ঞতাও খুব একটা সুখকর নয়।
১৯৯৫ সালে তিনি তাঁর হোটেল ও ক্যাসিনো ব্যবসা শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করেন, কিন্তু সেটি লাভের মুখ দেখেনি।
২০০৪ সালে সেই ব্যবসা দেউলিয়া হয়ে যায়, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তাঁর মিডিয়া কোম্পানি, ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপ বর্তমানে লোকসান গুনছে এবং শেয়ার বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প এবং মাস্ক দুজনেই প্রাইভেট ইক্যুইটি firm-এর কৌশল অনুসরণ করছেন।
প্রাইভেট ইক্যুইটি firm-এর মূলনীতি হলো, কোনো কোম্পানি কিনে তাতে দ্রুত লাভের জন্য কর্মী ছাঁটাই করা হয়, সম্পদ বিক্রি করা হয় এবং দেনা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
মাস্ক যখন ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার (বর্তমান X) কিনেছিলেন, তখন এই ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল।
এর ফলস্বরূপ, দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির মূল্য প্রায় ৮০ শতাংশ কমে যায়।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে।
মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’-এর অধীনে হাজার হাজার কর্মীকে হয় ছাঁটাই করা হয়েছে, নয়তো ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে ৭০,০০০ এর বেশি কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে, যা বিভাগের প্রায় ১৫ শতাংশ।
এছাড়াও, সরকারের মালিকানাধীন মূল্যবান সম্পত্তি বিক্রি করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন কিছু ক্ষেত্রে খরচ কমতে পারে, তেমনই এর ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে সরকারি সংস্থাগুলোকে ব্যবসার মতো করে পরিচালনার এই প্রবণতা শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন