যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আমদানি করা মদ এবং শ্যাম্পেনের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণ হলো, ইইউ’র পক্ষ থেকে মার্কিন বার্বন হুইস্কির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ইইউ’র সকল অ্যালকোহল পণ্যের উপর এই শুল্ক আরোপ করা হবে, কারণ তারা বার্বন হুইস্কির উপর ‘অযৌক্তিক’ শুল্ক বসিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ইইউ’র এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প এর আগে ইইউ থেকে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যার প্রতিক্রিয়ায় ইইউ এই পদক্ষেপ নেয়।
ট্রাম্প প্রায়ই অভিযোগ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদাররা তাদের সুযোগ নিচ্ছে এবং এই শুল্কের মাধ্যমে তিনি দেশে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন। যদিও অর্থনীতিবিদদের একটা বড় অংশ এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন।
বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেছেন যে, ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় স্বাভাবিক হতে কিছু সময় লাগতে পারে। এরই মধ্যে শেয়ার বাজারে দরপতন দেখা দেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ইইউ’র পাল্টা পদক্ষেপের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাম্প বলেন, “যদি এই শুল্ক অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স এবং ইইউ’র অন্যান্য দেশ থেকে আসা সকল ওয়াইন, শ্যাম্পেন এবং অ্যালকোহল পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইন ও শ্যাম্পেন ব্যবসার জন্য দারুণ হবে।”
বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ইউরোপীয় শেয়ার বাজারেও দরপতন হয়েছে। ফ্রান্সের শেয়ার বাজার সূচক ০.৩ শতাংশ এবং জার্মানির ড্যাক্স সূচক ০.৬ শতাংশ কমেছে।
ট্রাম্প ইইউ’র সমালোচনা করে বলেন, এই জোট ‘যুক্তরাষ্ট্রকে শোষণ করার উদ্দেশ্যে’ গঠিত হয়েছে এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে ‘শত্রুভাবাপন্ন ও নিপীড়ক’ কর ও শুল্ক আরোপকারী কর্তৃপক্ষের একটি। অন্যদিকে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য ‘লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা এনেছে এবং উভয় পক্ষের জন্য লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে’।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান