যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মপরিচালনা নিয়ে বিতর্ক: স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের অভাব?
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মপরিচালনা বিভাগে কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা এবং কর্মীদের প্রতি ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন মহল। সরকারি কাজকর্মের দক্ষতা বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এতে সুফলের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মী ছাঁটাইয়ের এই প্রক্রিয়াটি সুপরিকল্পিত নয়। সরকারি বিভাগের প্রধানদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং নতুন কর্মীদের নিয়োগেও রয়েছে অনিশ্চয়তা। কর্মীদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার পরিবর্তে অন্য কোনো বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এমনকি, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তাদের অপসারণের কারণে সরকারি কাজে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কর্মপরিচালনা বিষয়ক একটি গবেষণা সংস্থার প্রধান, ম্যাক্স স্টিয়ারের মতে, সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ একটি ‘প্রকাশ্য সম্পদের ধ্বংসযজ্ঞ’-এর শামিল। তাঁর মতে, সরকার জনগণের সেবার জন্য গঠিত হয়েছে, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়। এখানে স্বচ্ছতা বজায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বর্তমানে যা ঘটছে, তাতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই আশঙ্কা করছেন, সরকারের এই নীতির কারণে জনগণের অর্থ অপচয় হতে পারে। কর্মীদের ক্ষতিপূরণ, নতুন কর্মী নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত জনগণের উপরই চাপ সৃষ্টি করবে। উদাহরণস্বরূপ, নতুন একজন কর্মীকে নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুত করতে প্রায় ৫,০০০ ডলার খরচ হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ লক্ষ টাকার বেশি।
তবে, সরকারের পক্ষ থেকে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে সরকারি কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং অর্থের সাশ্রয়ের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সমালোচকদের মতে, এর কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। এছাড়া, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের অপসারণের ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ঘাটতি হতে পারে এবং সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে সিনেটে আলোচনা হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য চাপ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন অনেকে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন