যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ক নীতি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মার্কিন জনতা। সম্প্রতি, সিএনএন-এর জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য, যেখানে অধিকাংশ মার্কিনি মনে করেন, ট্রাম্পের এই নীতি দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ফলপ্রসূ হবে না। এমনকি তার এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর বলেও মনে করেন অনেকে।
জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করেন, ট্রাম্পের নীতি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় খুব একটা সহায়ক হবে না। ট্রাম্পের রাশিয়া বিষয়ক নীতিতে প্রায় ৫৯ শতাংশ এবং ইউক্রেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫৫ শতাংশ মানুষ অসন্তুষ্ট। তাদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খারাপ ফল বয়ে আনবে।
তবে, এই বিষয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রয়েছে স্পষ্ট বিভাজন। রিপাবলিকানদের মধ্যে একটি বড় অংশ ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতিকে সমর্থন করেন। তারা মনে করেন, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো দেশের জন্য ভালো। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ট্রাম্পের নীতির কড়া সমালোচনা লক্ষ করা গেছে। তারা মনে করেন, ইউক্রেনকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি কিছু করতে পারতো।
জরিপে আরও দেখা যায়, অধিকাংশ মার্কিনি ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বা বন্ধু হিসেবে এবং রাশিয়াকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করেন। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে ইউক্রেনকে মিত্র হিসেবে দেখা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। রাশিয়ার প্রতি নেতিবাচক মনোভাবও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
বর্তমানে, ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র কতটুকু সাহায্য করছে, সে বিষয়েও জনমতে ভিন্নতা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সাহায্য করছে, আবার কারো মতে সাহায্য আরও বাড়ানো উচিত।
এই জরিপে ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতির প্রতি জনগণের অনাস্থা বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক তাঁর পদক্ষেপগুলোতে প্রায় ৬০ শতাংশ মার্কিনি অসন্তুষ্ট। তাদের মতে, ট্রাম্প একজন effective world leader নন।
অন্যদিকে, জরিপে উঠে এসেছে, ঐতিহ্যবাহী মিত্রদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আস্থায় কিছুটা ভাটা পড়েছে। বিশেষ করে, কানাডা ও মেক্সিকোর প্রতি আমেরিকানদের মনোভাব আগের চেয়ে কিছুটা দুর্বল হয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েল সম্পর্কেও তাদের ধারণায় পরিবর্তন এসেছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে, ইরান, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নেতিবাচক মনোভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
এই জরিপটি গত ৬ থেকে ৯ মার্চের মধ্যে ১,২০৬ জন মার্কিন নাগরিকের ওপর চালানো হয়। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, এর ত্রুটির পরিমাণ ছিল +3.3 শতাংশ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন