মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বিচার বিভাগের (Justice Department) সদর দফতরে ভাষণ দেবেন।
হোয়াইট হাউস এটিকে “আইন ও শৃঙ্খলা” বিষয়ক বক্তৃতা হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এই সিদ্ধান্তটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ অতীতে সাবেক প্রেসিডেন্টরা সাধারণত এই দপ্তর থেকে দূরে থাকতেন, যাতে তাদের কার্যক্রম রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকে।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিচার বিভাগের প্রতি তার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন।
তিনি এমন এক সময়ে এই ভাষণ দিতে যাচ্ছেন, যখন তার বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে।
এমনকী, তার সময়ে বিচার বিভাগে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত ও পদত্যাগের ঘটনাও ঘটেছে, যাদের অনেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
অতীতে বারাক ওবামা একবার এই বিভাগে ভাষণ দিয়েছিলেন, তবে সেটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রম বিষয়ক একটি নতুন নির্দেশিকা ঘোষণার উদ্দেশ্যে।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে বিচার বিভাগ থেকে দূরে ছিলেন, কারণ তার নির্বাচনী প্রচার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার সম্ভাব্য যোগসূত্র নিয়ে তদন্ত চলছিল।
যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি, তবে সেই সময়ে বিচার বিভাগের প্রতি তার দূরত্ব বজায় ছিল।
এমনকি ২০১৭ সালে তিনি এফবিআই সদর দফতরে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু উপদেষ্টাদের আপত্তির কারণে তা বাতিল করা হয়।
ট্রাম্প বরাবরই বিচার বিভাগ ও এফবিআই-এর সমালোচনা করে এসেছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এই সংস্থাগুলো তার, তার সহযোগী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তদন্ত করছে।
এমনকি নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করবেন।
অন্যদিকে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ডও বিচার বিভাগ থেকে নিজেদের দূরে রেখেছেন, বিশেষ করে তাদের পুত্র হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে চলা তদন্তের কারণে।
তারা প্রমাণ করতে চেয়েছেন যে, বিচার বিভাগের ওপর তাদের কোনো প্রভাব নেই।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলের ঘটনার প্রথম বার্ষিকীতে গারল্যান্ড ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ট্রাম্পকে ওই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত করা যেতে পারে।
এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও, নির্বাচনের পর তা খারিজ হয়ে যায়।
এছাড়া, গোপনীয় দলিলপত্র নিজের কাছে রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আনা একটি মামলাও আদালত খারিজ করে দেয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন