ছোট্ট শান, তার প্রথম দাঁতটি হারানোর অপেক্ষায় ছিল অধীর আগ্রহে। বন্ধুদের কাছ থেকে সে রূপকথার গল্প শুনেছিল— দাঁত পড়লে নাকি ‘দাঁতপরী’ আসে!
বালিশের নিচে দাঁত রেখে দিলে, দাঁতপরী তার বদলে রেখে যায় কিছু টাকা। শানের কল্পনায় ছিল, দাঁতটা ফেললেই বুঝি তার হাতে আসবে অনেকগুলো চকচকে নতুন টাকা।
একদিন, নাস্তার টেবিলে বসে শান বুঝতে পারল তার একটি দাঁত টলমল করছে। সে খুব সাবধানে নাড়াচাড়া করছিল, আর তখনই ঘটল বিপত্তি।
দাঁতটি টুপ করে তার পেটে চলে গেল, কারণ সে তখন খাচ্ছিলো মুচমুচে একটি নাস্তার উপকরণ। দাঁত গেল, কিন্তু শানের মন খারাপ হলো না।
বরং সে ছিল বেশ খুশি, কারণ দাঁত হারানোর অভিজ্ঞতা তার কাছে দাঁতপরীর কাছ থেকে অনেকগুলো টাকা পাওয়ার সুযোগ নিয়ে এসেছিল।
কিন্তু আসল সমস্যা হলো, দাঁত তো পেটে! এখন দাঁতপরী টাকা দেবে কীভাবে? শানের এই প্রশ্নে তার বাবা-মা বেশ বিপাকে পড়লেন।
তারা জানতেন, শানের এই বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে হবে। তাই তারা দাঁতপরীর অফিসের আদলে একটি ফর্ম তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
বাবা, যিনি পেশায় একজন অফিসের কর্মচারী, তিনি একটি ফর্ম তৈরি করলেন, যেখানে দাঁতের রঙ, আকার এবং অন্যান্য বিবরণ লেখার ব্যবস্থা ছিল।
ফর্মের নাম দেওয়া হলো ‘ফর্ম টিএফ-২৩০’। এরপর তিনি তার বন্ধু, যে কিনা গ্রাফিক্স ডিজাইনার, তাকে ফর্মটি আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য অনুরোধ করলেন।
বন্ধুর সহায়তায় ফর্মটিতে যুক্ত হলো দাঁতের ছবি, সরকারি বারকোড এবং দাঁতপরীর অফিসের সিলমোহর।
ফর্ম তৈরি হয়ে গেলে, শানকে সেটি দেওয়া হলো। শান মনোযোগ দিয়ে ফর্মটি পূরণ করল এবং রাতে বালিশের নিচে রেখে দিল।
পরের দিন সকালে, শান যখন দেখল তার জন্য সত্যিই কিছু টাকা রাখা হয়েছে, তখন তার আনন্দের সীমা রইল না।
বাবার এই অভিনব কান্ডে শানের দাঁতপরী বিষয়ক বিশ্বাস আরও দৃঢ় হলো।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান