মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সম্প্রতি, তিনি বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা সরাসরি বাজারের ওপর প্রভাব ফেলছে।
এই ধরনের নীতি গ্রহণ করার আগে, রাজনীতিবিদদের সতর্ক হওয়া উচিত, কারণ এর ফলস্বরূপ বাজারের অস্থিরতা দেখা দিতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিতে পারে।
যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের কথা এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি যখন বিশাল আকারের কর হ্রাসের ঘোষণা করেন, তখন ব্রিটিশ বন্ড মার্কেটে বড় ধরনের দরপতন হয়।
এর ফলস্বরূপ, তিনি দ্রুত ক্ষমতা হারান। ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের থেকে ভিন্ন, তবুও বাজারের ওপর তার নীতির প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্প হয়তো বাজারের এই প্রতিক্রিয়ার পরিমাণ বুঝতে পারছেন না। বাজারের অস্থিরতা কমাতে তিনি শুল্কনীতি পরিবর্তন করতে পারেন।
তবে, বাজারের এই চাপ কতদিন তিনি সহ্য করতে পারবেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বিনিয়োগকারীরাও এখন ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
শেয়ার বাজারের সূচকগুলি এরই মধ্যে নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ, এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখের রেকর্ড উচ্চতা থেকে ৮.২% কমেছে।
প্রযুক্তি নির্ভর নাসডাক কম্পোজিট ডিসেম্বরের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ১২% পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষ থেকেও তাদের ভবিষ্যৎ আয়ের পূর্বাভাস কমানো হয়েছে, যা বাজারের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের নীতির কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের বিনিয়োগের পরিকল্পনা করতে সমস্যা অনুভব করছেন। তারা বাজারের অনিশ্চয়তার কারণে নতুন করে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করছেন।
অতীতে, ট্রাম্প যদিও শুল্ক আরোপের কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন, যেমন চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্কের প্রস্তাবনা তিনি সরাসরি কার্যকর করেননি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাণিজ্য শুল্কের সরাসরি প্রভাব সাধারণ মানুষের উপর পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ফলে বিয়ারের দাম সামান্য বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের প্রতিক্রিয়ার ওপর নজর রাখা জরুরি, কারণ এর একটি বড় প্রভাব পড়ে ভোক্তাদের ব্যয়ের ওপর।
ভোক্তারা যদি তাদের বিনিয়োগের মূল্য কমতে দেখে তবে তারা তাদের খরচ কমাতেও পারে, যা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যদিও এখনো পর্যন্ত বাজারের প্রতিক্রিয়ার প্রতি তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তবে অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে বাজারের এই প্রভাবকে তিনি কতদিন উপেক্ষা করতে পারবেন, তা এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন