খেলাধুলায় মেয়েদের জয়যাত্রা: ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী আয়ের পরিমাণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা!
খেলাধুলায় মেয়েদের অংশগ্রহণ এবং তাদের সাফল্যের চিত্র দিন দিন উজ্জ্বল হচ্ছে। সম্প্রতি ডেলয়েট নামক একটি গবেষণা সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী মেয়েদের খেলাধুলা থেকে প্রায় ২.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা) আয় হতে পারে।
মেয়েদের বাস্কেটবল এবং ফুটবল এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
ডেলয়েটের এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, মেয়েদের বাস্কেটবল একাই ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি আয় করতে পারে। যেখানে মেয়েদের ফুটবলের আয় ৭৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২৫ সালে ৮২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, ডেলয়েটের এই ইতিবাচক পূর্বাভাসের ঠিক বিপরীতে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা’র (FIFA) একটি প্রতিবেদনে মেয়েদের খেলার জগতে বিদ্যমান কিছু কঠিন বাস্তবতার চিত্র উঠে এসেছে। ফিফা’র সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের ১০১টি অঞ্চলের ৬৬৯টি ক্লাবের নারী ফুটবলারদের গড় বেতন মাত্র ১০,৯০০ মার্কিন ডলার।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শীর্ষস্থানীয় ২৪টি অঞ্চলের লীগগুলোর পরিচালন ব্যয় তাদের আয়ের চেয়ে ৭১.১ শতাংশ বেশি। ফিফার হিসাব অনুযায়ী, শীর্ষ ক্লাবগুলোর মধ্যে ৬৭ শতাংশই প্রতি বছর লোকসান গুনছে।
দর্শকপ্রিয়তা কম থাকার কারণে মেয়েদের ফুটবল ম্যাচগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রাজস্ব আসে না। বর্তমানে ম্যাচ প্রতি গড় দর্শক সংখ্যা ১,৭১৩ এবং টিকিটের গড় মূল্য ৯.৩০ মার্কিন ডলার।
তবে, ডেলয়েটের বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাণিজ্যিক দিক থেকে মেয়েদের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। বিভিন্ন ব্র্যান্ডগুলো এখন মেয়েদের খেলাধুলায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছে, যা আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করবে।
বাস্কেটবলের খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত চুক্তি এবং পণ্য বিক্রিও এই আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ফিফা’র প্রতিবেদনে নারী কোচের স্বল্পতার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে, নারী ফুটবল দলের প্রধান কোচের পদে নারীদের সংখ্যা মাত্র ২২ শতাংশ।
ফিফার প্রধান ফুটবল কর্মকর্তা জিল এলিস বলেন, “আমরা রাতারাতি এই চিত্র পরিবর্তন করতে পারব না, তবে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারব কোথায় বিনিয়োগ করা দরকার এবং কিভাবে নারী কোচিং প্রোগ্রামগুলোকে আরও উন্নত করা যায়।”
মেয়েদের খেলাধুলায় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ এবং এর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। তবে, খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং খেলার মান উন্নয়নে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান