গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযান, যুদ্ধের সম্ভবনা বাড়ছে।
গত মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল, ২০২৪) ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করেছে। এতে এখন পর্যন্ত তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, হামাস নতুন করে অস্ত্র চুক্তি মানতে রাজি না হওয়ায় তারা এই অভিযান শুরু করেছে। তবে হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে।
উভয় পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ফলে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এই চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল তিনটি ধাপে আলোচনা ও কার্যক্রম পরিচালনা করা।
প্রথম ধাপ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, যেখানে হামাস ২৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় এবং ইসরায়েল প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়।
এরপর ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরে কিছু এলাকা খালি করে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই ইসরায়েল একতরফাভাবে গাজায় খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস যদি তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের অর্ধেককে মুক্তি দেয়, তবে তারা যুদ্ধবিরতি বাড়াতে রাজি আছে।
কিন্তু হামাস ইসরায়েলের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল আসলে বিদ্যমান চুক্তিকে দুর্বল করতে চাইছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে রয়েছেন।
অন্যদিকে নেতানিয়াহুর জোটসঙ্গীরা হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার আগে কোনো ধরনের চুক্তিতে যেতে রাজি নন।
এছাড়াও, নেতানিয়াহুর সরকার বাজেট পাসের সময়সীমার মধ্যে রয়েছে, এবং এই সংকট তাঁর রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
অনেকের মতে, গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু হলে তা নেতানিয়াহুর পক্ষে রাজনৈতিক সমর্থন বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
গাজায় নতুন করে সংঘাত শুরু হলে তা কেবল ওই অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরানের সমর্থনপুষ্ট ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হুতিদের আক্রমণের সম্ভবনাও বেড়ে যেতে পারে।
এছাড়াও, লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্তেও উত্তেজনা বাড়তে পারে।
এর আগে, গত নভেম্বরে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, যা কয়েক মাস ধরে চলা সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস