আফ্রিকার দেশ কঙ্গো ও রুয়ান্ডার মধ্যে চলমান সংঘাতের অবসানে কাতার-এর রাজধানী দোহাতে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (AU)। বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে AU-এর চেয়ারপার্সন মাহামুদ আলি ইউসুফ দুই দেশের নেতাদের “আলোচনার প্রতি অঙ্গীকার”-এর প্রশংসা করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে “এই গতি” বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক এই সংস্থা “আফ্রিকার সমস্যা সমাধানে আফ্রিকান নেতৃত্বাধীন সমাধানের প্রতি অবিচল সমর্থন” বজায় রাখবে। দোহা আলোচনা এই প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং চলমান আঞ্চলিক প্রক্রিয়াগুলোর পরিপূরক।
মঙ্গলবার, কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি এবং রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে-এর মধ্যে সরাসরি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা চলতি বছর কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করার পর এই প্রথম দুই নেতার মধ্যে সরাসরি বৈঠক হলো।
বৈঠকে নেতারা “অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে যুদ্ধবিরতি”-র ঘোষণা করেন এবং এর বিস্তারিত রূপরেখা “আসন্ন দিনগুলোতে” স্পষ্ট করা হবে বলে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, এম২৩ হলো কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় দুই শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম, যারা মূল্যবান খনিজ সম্পদ, বিশেষ করে কোবাল্ট-এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াই করছে। কঙ্গো সরকার, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে এম২৩-কে সমর্থন করার অভিযোগ করেছে, যদিও রুয়ান্ডা তা অস্বীকার করেছে।
২০২২ সালে এক দশকের বেশি সময় নীরব থাকার পর এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে আক্রমণ জোরদার করে। এর ধারাবাহিকতায় তারা প্রথমে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর গোমা এবং পরে ফেব্রুয়ারিতে বুকাভু দখল করে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৫ লক্ষেরও বেশি শিশু রয়েছে।
এদিকে, কঙ্গো এবং রুয়ান্ডার মধ্যে আলোচনার প্রাক্কালে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) এম২৩-এর শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সদস্য এবং রুয়ান্ডার সামরিক কমান্ডারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা