শিরোনাম: লোহিত সাগরে প্রবেশাধিকার নিয়ে ইরিত্রিয়ার সঙ্গে সংঘাত চায় না ইথিওপিয়া
বহুদিনের প্রতিপক্ষ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে লোহিত সাগরে প্রবেশাধিকার নিয়ে কোনো ধরনের সংঘাতে জড়াতে চায় না ইথিওপিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন।
সমুদ্র-সংলগ্ন দেশ না হওয়ায় ইথিওপিয়ার জন্য সমুদ্রপথে প্রবেশাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে, আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ উপায়েই তারা এই সমস্যার সমাধান করতে চায়।
সম্প্রতি, ইরিত্রিয়া জুড়ে সামরিক সমাবেশের ঘোষণা এবং ইথিওপিয়া সীমান্ত অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করার পর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল। এর পরেই আবি আহমেদের এই বক্তব্য আসে।
ইথিওপিয়ার এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে ইরিত্রিয়া। দেশটির সরকার মনে করে, ইথিওপিয়া কৌশলগতভাবে তাদের ‘আসাব’ বন্দর দখলের চেষ্টা করছে।
ইরিত্রিয়ার তথ্যমন্ত্রী ইয়েমানে গেব্রেমেসকেল এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন ইথিওপিয়াকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য চাপ দেয়।
ইয়েমানে আরও অভিযোগ করেন, ইরিত্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে— এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
আফ্রিকার এই দুই দেশের মধ্যে যদি আবার কোনো সংঘাত বাঁধে, তাহলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, এর আগে ২০১৯ সালে আবি আহমেদ প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে শান্তি স্থাপন করে নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেছিলেন।
এছাড়া, প্রতিবেশী দেশ সুদানে চলমান যুদ্ধের কারণে এমনিতেই এই অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) সঙ্গে ইথিওপিয়া সরকারের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধে ইরিত্রিয়ার সেনারা ইথিওপিয়াকে সমর্থন জুগিয়েছিল।
তবে, ২০২২ সালের নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির কারণে ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়ার মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। এই শান্তি চুক্তিতে টিপিএলএফ-কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বর্তমানে, টাইগ্রে অঞ্চলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন নিয়ে টিপিএলএফের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়েছে ইথিওপিয়া সরকার।
তবে, এই পরিবর্তনের ফলে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ জানিয়েছেন, ২০২৬ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রিটোরিয়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা