ভার্জিনিয়ার একটি ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেমস মনরোর বাসভবন ছিল, সেটি এখন একটি রাজ্য উদ্যানে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। জায়গাটির বর্তমান মালিকানা একটি পরিবারের হাতে, যারা এটিকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে চান। খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের অল্ডিতে অবস্থিত ‘ওক হিল’ নামের এই বিশাল এস্টেটটি একসময় প্রেসিডেন্ট জেমস মনরোর বাসস্থান ছিল। এটি এখন পর্যন্ত কোনো প্রেসিডেন্টের শেষ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ি, যা এটিকে ঐতিহাসিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ১৯৪৮ সাল থেকে এই বাড়িটি ডেলাশমট পরিবারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
তারা এখন ১,২৪০ একর জমির উপর অবস্থিত এই ঐতিহাসিক স্থানটিকে একটি রাজ্য উদ্যানে রূপান্তর করতে আগ্রহী।
পরিবারটির প্রধান গেইল ডেলাশমট জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গার যত্ন নিয়েছেন এবং এখন চান অন্য কেউ এর দেখাশোনা করুক। তাদের এই উদ্যোগে সমর্থন জুগিয়েছে ‘দ্য কনজারভেশন ফান্ড’ নামক একটি অলাভজনক সংস্থা।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রায় ৫২ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ২২ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। এছাড়াও, অন্যান্য সংস্থা প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।
ডেলাশমট পরিবার জায়গাটি বিক্রির জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার চাইছে।
ঐতিহাসিক এই স্থানটিতে প্রেসিডেন্ট মনরোর বাসস্থানের পাশাপাশি, একসময় এখানে ক্রীতদাস ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। তাদেরও রয়েছে এই জায়গার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক।
ইতিহাসবিদদের মতে, এটিকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হলে, এই অঞ্চলের ইতিহাস সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। স্থানীয় ব্ল্যাক হিস্টরি কমিটির চেয়ার ডোনা বোহানান মনে করেন, শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা না করে, এখানকার আদিবাসী এবং ক্রীতদাসদের জীবন সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের জানা উচিত।
তবে, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সহায়তার বিষয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদিও স্থানীয় প্রতিনিধি আলফোনসো লোপেজ এই বিলের পক্ষে সমর্থন জুগিয়েছেন, তবে রাজ্যের সিনেটে এটি এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।
সিনেটর এল. লুইস লুকাস এই বিলের ভালো দিকগুলো সমর্থন করলেও, সরকারের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাজ্যপাল ইয়ংকিন প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন, তবে এলাকাটি পরিদর্শনের পর তিনি তার মনোভাব পরিবর্তন করেছেন।
তিনি বলেছেন, তিনি বিষয়টি বিবেচনা করছেন এবং এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
ঐতিহাসিক এই স্থানটি, যেখানে একসময় আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রেসিডেন্টের বসবাস ছিল, সেটি এখন কিভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে চলছে আলোচনা। এর মাধ্যমে এখানকার ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস