ট্রাম্পের আইনি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধের ইঙ্গিত, বাড়ছে উদ্বেগ
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টিকারী আইন সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে সমস্ত আইন সংস্থা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করছে এবং তার কার্যক্রমকে বিলম্বিত করছে, তাদের চিহ্নিত করে শায়েস্তা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে।
এমনকি প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি সরাসরি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।
জানা গেছে, ট্রাম্প মূলত বেশ কয়েকটি আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন, যা তার নীতি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে অভিবাসন ও বহিষ্কার সংক্রান্ত বিষয়গুলো অন্যতম।
সম্প্রতি, ট্রাম্পের ক্ষমতা প্রয়োগের কারণে পল ওয়েইজ, পারকিন্স কোই এবং কোভিংটন অ্যান্ড বার্লিং-এর মতো বেশ কয়েকটি নামকরা আইনি সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পল ওয়েইজ-এর আইনজীবীদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে এবং তাদের ফেডারেল সরকারি ভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো মূলত সাবেক সহযোগী মার্ক পমেরান্টজের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে নেওয়া হয়েছে, যিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা তৈরির চেষ্টা করেছিলেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের দ্রুত বহিষ্কারের জন্য তিনি যে ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ ব্যবহারের চেষ্টা করছেন, সেই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলার বিচারকের সিদ্ধান্ত।
বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ এই বহিষ্কার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের এই রায়ের প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রশাসন বিচারকের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং মামলার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার সুযোগ’ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ আইন সংস্থাগুলোর মধ্যে ভীতির সঞ্চার করতে পারে এবং এর ফলে তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার সংখ্যা কমে যেতে পারে।
এমনকি, বৈধ কারণ থাকা সত্ত্বেও, আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন যে ট্রাম্পের সমালোচনার শিকার হলে তাদের পেশাগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ট্রাম্পের এই প্রতিশোধমূলক কার্যক্রম, আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান