“ক্লুলেস” : নব্বই দশকের নস্টালজিয়া, ডিজিটাল যুগে কিশোর জীবনের প্রতিচ্ছবি
নব্বইয়ের দশকে মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় চলচ্চিত্র “ক্লুলেস”-এর মঞ্চ রূপান্তর ঘটেছে লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডে। চলচ্চিত্রটি এখনো দর্শক হৃদয়ে গেঁথে আছে, সেই নস্টালজিয়াকে সঙ্গী করে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
চলচ্চিত্রটির গল্পে দেখা যায়, ধনী পরিবারের কিশোরী শের হলোউইটজের জীবনযাত্রা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই নতুন মঞ্চনাটকটি বর্তমান ডিজিটাল যুগে কিশোর-কিশোরীদের জীবন কেমন, সেই বিষয়টি তুলে ধরেছে।
ওয়েস্ট এন্ডে এই ধরনের নস্টালজিক গল্পের নাটকের প্রবণতা বাড়ছে। “ক্লুলেস”-এর আগে “মিন গার্লস” এবং “দ্য ডেভিল ওয়্যারস প্রাদা”-এর মতো জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোও মঞ্চে এসেছে।
এই ধরনের নাটকগুলো দর্শকদের মধ্যে নস্টালজিয়া তৈরি করে, যা তাদের পুরনো দিনের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
“ক্লুলেস”-এর গল্পটি মূলত জেন অস্টেনের “এমা” উপন্যাসের অনুপ্রেরণা থেকে তৈরি।
তবে, ডিজিটাল দুনিয়ায় বেড়ে ওঠা আজকের কিশোর-কিশোরীদের জীবন আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল। সামাজিক মাধ্যম, অনলাইন হয়রানি, এবং ব্যক্তিগত ছবি চেয়ে পাঠানোর মতো বিষয়গুলো তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।
“ক্লুলেস”-এর নির্মাতারা এই আধুনিক সমস্যাগুলো এড়িয়ে গিয়েছেন। তারা বরং নব্বই দশকের সরল, স্বাভাবিক কিশোর জীবনের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।
অন্যদিকে, “মিন গার্লস” নাটকটি ২০০৪ সালের প্রেক্ষাপটের গল্প হলেও, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখিয়েছে। যদিও এই নাটকে সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে, তবে ডিজিটাল যুগে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেকার জটিলতাগুলো সেভাবে আসেনি।
“ক্লুলেস” -এর মঞ্চায়ন দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কেউ কেউ এর সেট এবং গানের সমালোচনা করেছেন, আবার অনেকে নব্বই দশকের নস্টালজিক অনুভূতির কারণে নাটকটি উপভোগ করেছেন।
সমালোচকদের মতে, “ক্লুলেস”-এর গল্পে আধুনিক জীবনের গভীরতা নেই।
আসলে, ডিজিটাল যুগে বেড়ে ওঠা কিশোর-কিশোরীদের জীবন আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং।
তাদের মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার মতো বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
“ক্লুলেস”-এর মতো নস্টালজিক গল্পের নাটকগুলো হয়তো দর্শকদের সাময়িক আনন্দ দিতে পারে, তবে বর্তমান সময়ের কঠিন বাস্তবতা থেকে তারা দূরে থাকে।
ভবিষ্যতে, হয়তো আরও গভীর এবং বাস্তবধর্মী গল্প নিয়ে নাটক তৈরি হবে, যা কিশোর জীবনের জটিলতাগুলোকে আরও ভালোভাবে তুলে ধরবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান