সিরিয়ার দক্ষিণে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ছয় জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার কয়েয়া অঞ্চলে চালানো এই হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, সিরিয়ার সশস্ত্র যোদ্ধারা প্রথমে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
এর জবাবে ইসরায়েলি সেনারা পাল্টা জবাব দেয় এবং একটি যুদ্ধবিমান ওই যোদ্ধাদের অবস্থানে আঘাত হানে। তবে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানায়নি।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, “কুয়েয়া গ্রামে ইসরায়েলের এই আগ্রাসন সিরিয়ার ভূখণ্ডের উপর একটি মারাত্মক হুমকি।
ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাসও এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং এটিকে “নতুন যুদ্ধাপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছে।
এই হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি, বিরোধী যোদ্ধারা সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারার নেতৃত্বে এই সরকার গঠিত হওয়ার পর ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক অবস্থানে কয়েকশবার বিমান হামলা চালিয়েছে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে থাকা একটি বাফার জোনেও সেনা পাঠিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান, কজা কাল্লাস, মঙ্গলবার সতর্ক করে বলেছেন, সিরিয়ার উপর ইসরায়েলের হামলা “পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলতে পারে।
তিনি ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সারের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এই হামলাকে “বিপজ্জনক” হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং এর ফলে “এ অঞ্চলে আরও সংঘাত ও উত্তেজনা” সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলকে, যা ইসরায়েল কর্তৃক অধিকৃত গোলান মালভূমির সঙ্গে সীমান্তবর্তী, সম্পূর্ণভাবে অসামরিকীকরণের দাবি জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, “সিরিয়ায় থাকার ইসরায়েলের অভিপ্রায়” এবং দক্ষিণাঞ্চলকে সম্পূর্ণভাবে অসামরিক করার দাবি” তাকে উদ্বিগ্ন করেছে।
মার্চ মাসের শুরুতে কায়রোতে অনুষ্ঠিত আরব সম্মেলনে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আল-শারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং “অবিলম্বের” তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে।
তিনি এই অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতিকে “প্রত্যক্ষ হুমকি” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা