নরওয়ের খ্যাতিমান অ্যাথলেট, ডাবল অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ইয়াকব ইনগেব্রিগটসেন-এর বাবা ও প্রাক্তন কোচ জার্ট ইনগেব্রিগটসেনের বিরুদ্ধে ওঠা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগের বিচার চলছে। সম্প্রতি, আদালতে নিজের বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এক মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার কথা শোনান ইয়াকব।
তিনি জানান, শৈশবে তিনি সবসময় এক ভীতি ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে বড় হয়েছেন।
সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ইয়াকব আদালতকে বলেন, তার বেড়ে ওঠা ছিল ভয়ের সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ। কৈশোরে তিনি অনুভব করতেন, তার কোনো স্বাধীনতা ছিল না, কোনো কিছুই নিজের মতো করে করার সুযোগ ছিল না।
নরওয়ের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “আমার জীবনে সবকিছুই আমার জন্য নিয়ন্ত্রিত হতো, সবকিছু বাবা ঠিক করতেন। এর মধ্যে অনেক কারসাজি ছিল।”
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে ইয়াকব জানান, ছোটবেলায় স্কুলের একটি খারাপ রিপোর্টের কারণে তার বাবা তাকে মারধর করেছিলেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র আট বছর।
সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, আমি নিশ্চয়ই গুরুতর কিছু ভুল করেছি, আর এখন কী হতে চলেছে, সেই ভয়ে ছিলাম।”
এই মামলার শুনানিতে জার্ট ইনগেব্রিগটসেনের বিরুদ্ধে তার দুই সন্তানের ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ইয়াকব এবং তার বোন ইনগ্রিডও রয়েছেন।
যদিও জার্ট ইনগেব্রিগটসেন শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তার সর্বোচ্চ ছয় বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
শুধু তাই নয়, ইয়াকব আরও জানান, যখন তার বয়স ১৬ বছর, তখন এলিজাবেথ অ্যাসারসন নামের এক মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। বর্তমানে এলিজাবেথ ইয়াকবের স্ত্রী।
ইয়াকবের ভাষ্যমতে, সেই সময় তার বাবা এই সম্পর্কের ঘোর বিরোধী ছিলেন। বাবার আশঙ্কা ছিল, এই সম্পর্কের কারণে ইয়াকবের ক্রীড়া জীবনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
এই বিষয়ে ইয়াকব বলেন, “আমার বাবার মতো একজন মানুষ এলিজাবেথের সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারতেন, যিনি আমার এত প্রিয়, এটা আমার জন্য খুবই কষ্টকর ছিল।”
এই মামলার শুনানি বর্তমানে সান্দনেসের সোর-রোগাল্যান্ড জেলা আদালতে চলছে এবং আগামী ১৬ই মে পর্যন্ত এটি চলবে বলে জানা গেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান