ফিলিস্তিনের অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক হামদান বাল্লালকে সম্প্রতি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সৈন্যের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার সময় তিনি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন।
পশ্চিম তীরে নিজের প্রতিবেশী বাড়ির উপর বসতি স্থাপনকারীদের হামলার দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন বাল্লাল। পবিত্র রমজান মাসে যখন স্থানীয় বাসিন্দারা ইফতারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই এই ঘটনা ঘটে।
হামদান বাল্লাল জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যখন চরম আকার ধারণ করে, তখন তিনি নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিচিত এক বসতি স্থাপনকারী এবং দুইজন ইসরায়েলি সৈন্য তাকে অনুসরণ করে এবং তার বাড়ির কাছেই তার উপর হামলা চালায়।
বাল্লাল জানান, সৈন্যরা তার দিকে বন্দুক তাক করে এবং বসতি স্থাপনকারী তাকে মারধর করে। তিনি বলেন, “সৈন্যরা আমাকে মারধর করতে দেয়, এমনকি তারাও আমাকে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে। আমি অনুভব করেছিলাম, তারা আমাকে শুধু শাস্তি দিতে চায়নি, বরং মেরে ফেলতে চেয়েছিল।”
হামদান বাল্লাল এবং আরও দুই ইসরায়েলি নাগরিক মিলে তৈরি করেছেন ‘নো আদার ল্যান্ড’ নামের একটি তথ্যচিত্র। এই চলচ্চিত্রে পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা এবং ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভাঙার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গত ২রা মার্চ এই তথ্যচিত্রটি সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে অস্কার জয় করে।
বাল্লাল আরও জানান, ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী “বসতি স্থাপনকারীদের যা খুশি, তা করার অনুমতি দিচ্ছে”। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৭ মাসে ইসরায়েলি সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় পশ্চিম তীরে অন্তত ৮৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি বন্দি অধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘প্যালেস্টিনিয়ান প্রিজনার’স সোসাইটি’-এর মতে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫,৭০০ ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে।
হামলার পর বাল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে কিরিয়াত আরবার একটি পুলিশ স্টেশন থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা