সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজকাল স্বাস্থ্য আর ফিটনেস নিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের ছড়াছড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটানো, কঠিন ডায়েট করা – এমন সব কঠোর নিয়ম প্রায়ই দেখা যায়।
কিন্তু এইসব তথাকথিত ‘ওয়েলনেস চ্যালেঞ্জ’-এর নামে যা চলছে, তা কি আদৌ আমাদের উপকারে আসে? অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চরমপন্থী এই চ্যালেঞ্জগুলো আসলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
তার বদলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সহজ কিছু অভ্যাস তৈরি করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. থমাস কারান বলেন, “আমরা প্রায়ই দেখি, এমন চ্যালেঞ্জগুলো আসে যখন আমরা নিজেদের প্রতি মনোযোগ কম দিই।
হয়তো আমরা নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত, অথবা কোনো খারাপ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছি। দ্রুত ফল পাওয়ার আশায় আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি, কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, এই ধরনের চ্যালেঞ্জগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পরে।
মানুষজন অন্যদের “পারফেক্ট” চেহারা দেখে প্রভাবিত হয় এবং সেই রকম হতে চায়।
কিন্তু সবার শরীরের গঠন আলাদা, তাই অন্যের সাফল্যের সঙ্গে নিজের তুলনা করাটা হতাশাজনক হতে পারে।
রেনে ম্যাকগ্রেগর, যিনি একজন পুষ্টিবিদ এবং খাদ্যগ্রহণে সমস্যা নিয়ে কাজ করেন, তিনি মনে করেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনও পরামর্শ নেওয়ার আগে, যিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, তাঁর উদ্দেশ্যটা কী, সেটা বোঝা জরুরি।
তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছেন, তাঁর এতে কী লাভ? যদি তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হন, তাহলে তাঁর কথা সব সময় বিশ্বাস করা নাও যেতে পারে।
তাহলে উপায়? স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ছোট ছোট, সহজ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
এগুলো আমাদের শরীর ও মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চরমপন্থী চ্যালেঞ্জের বদলে, এই ধরনের অভ্যাসগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য মানে শুধু একটা নির্দিষ্ট ওজনের সংখ্যা বা সুন্দর দেখতে হওয়া নয়।
স্বাস্থ্যকর জীবন মানে হলো এমন কিছু করা যা আমাদের ভালো লাগে এবং যা আমাদের মানসিক শান্তি দেয়।
তাই, অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা না করে, নিজের ভালো থাকার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনও নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য একটি জটিল বিষয়, তাই সঠিক তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য উৎসের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন