বিশ্বের সবচেয়ে জটিল হাতঘড়ি: ভ্যাশেরন কনস্টান্টিনের নতুন সৃষ্টি। সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ভ্যাশেরন কনস্টান্টিন (Vacheron Constantin) তৈরি করেছে বিশ্বের সবচেয়ে জটিল হাতঘড়ি।
ঘড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘লে কেবিনেটিয়ের সোলারিয়া আল্ট্রা গ্র্যান্ড কমপ্লিকেশন’ (Les Cabinotiers Solaria Ultra Grand Complication)। ঘড়িটিতে রয়েছে অত্যাশ্চর্য সব বৈশিষ্ট্য।
আকাশে সূর্যের অবস্থান নির্ণয় থেকে শুরু করে নক্ষত্র কখন দৃশ্যমান হবে, তারও হিসাব রাখতে পারে এই অত্যাধুনিক ঘড়িটি। খবরটি দিয়েছে সিএনএন।
ঘড়িটির প্রধান বৈশিষ্ট্য:
ভ্যাশেরন কনস্টান্টিনের এই নতুন সৃষ্টিতে রয়েছে মোট ৪১টি জটিল প্রক্রিয়া বা ‘কমপ্লিকেশন’। ঘড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে ১ হাজার ৫২১টি আলাদা যন্ত্রাংশ।
ঘড়িটির নকশা তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় আট বছর। ঘড়িটির আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সূর্যের অবস্থান, উচ্চতা, গতিপথ এবং পৃথিবীর নিরক্ষরেখার সাপেক্ষে তার কৌণিক দূরত্ব নির্ণয় করার ক্ষমতা।
এছাড়াও, রাশিচক্রের ১৩টি নক্ষত্রপুঞ্জের ঘূর্ণায়মান ডিসপ্লে ব্যবহার করে জানা যাবে, আকাশে কখন কোন নক্ষত্র দেখা যাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘কমপ্লিকেশন’ হলো সময় গণনার প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে ঘড়ির অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য। যেমন— গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার বা চাঁদের দশার হিসাব রাখা।
ঘড়িটির বডি তৈরি করা হয়েছে ১৮ ক্যারেট সাদা সোনা দিয়ে। এর ভেতরে রয়েছে ২০০টির বেশি মূল্যবান পাথর, যার মধ্যে রয়েছে কিছু নীলকান্তমণি ডিস্ক।
ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনের মিশেল:
ভ্যাশেরন কনস্টান্টিন ১৭৫৫ সাল থেকে ঘড়ি তৈরি করছে। বর্তমানে এটি বিলাসবহুল পণ্যের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রিচমন্ট গ্রুপের মালিকানাধীন।
এর আগে, তারা সবচেয়ে জটিল পকেট ঘড়ি তৈরি করে রেকর্ড গড়েছিল। বার্কলে গ্র্যান্ড কমপ্লিকেশন নামের সেই পকেট ঘড়িটিতে ৬৩টি ‘কমপ্লিকেশন’ ছিল।
তবে, নতুন হাতঘড়িটি আকারে পকেট ঘড়ির চেয়ে অনেক ছোট। এর ডায়ামিটার বা ব্যাস হলো ৪৫ মিলিমিটার (১.৮ ইঞ্চি)।
ভ্যাশেরন কনস্টান্টিনের ঐতিহ্য এবং শৈলী বিষয়ক পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান সেলমোনি জানিয়েছেন, এই ঘড়ি তৈরির মূল চ্যালেঞ্জ ছিল এত জটিল প্রক্রিয়াগুলো একটি ছোট আকারের হাতঘড়িতে স্থাপন করা।
তিনি আরও বলেন, ঘড়ি নির্মাতারা ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশগুলো ‘সবচেয়ে যৌক্তিক এবং কমপ্যাক্ট উপায়ে’ সাজিয়েছেন।
সেলমোনির মতে, প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সময় গণনা, ক্যালেন্ডার, ক্রোনোগ্রাফ এবং ঘণ্টা বাজানোর মতো প্রধান বিষয়গুলো একটি বেস প্লেটের ওপর স্থাপন করা।
একইসঙ্গে, জ্যোতির্বিদ্যার কার্যাবলী যুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত একটি প্লেট ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের নকশার কারণেই হাতঘড়িটিকে সুন্দর ও সুষম রূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন