মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বিতর্কিত ব্যক্তির সাক্ষাৎ ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টাদের এড়িয়ে, ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ পান চরম ডানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুুমার।
এই সাক্ষাতের কয়েক দিনের মধ্যেই জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়।
জানা গেছে, লুমার সম্প্রতি ট্রাম্পকে ফোন করেন এবং এর পরেই তাকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের বৈঠকের পর, যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ)-এর পরিচালক এবং উপ-পরিচালকসহ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়।
সিএনএন সূত্রে খবর, লুুমার ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপে তাদের অপসারণের পক্ষে কথা বলেছিলেন।
লুমার তার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে লেখেন, “এটাকে ‘যাচাই-বাছাই’ বলা হয়। এনএসএ নেতাদের বরখাস্ত আমেরিকান জনগণের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।” এই ঘটনা ট্রাম্পের আগের মেয়াদের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন তিনি প্রায়ই অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা এবং প্রান্তিক ব্যক্তিদের সরাসরি ওভাল অফিসে প্রবেশের সুযোগ দিতেন।
যদিও ট্রাম্পের উপদেষ্টারা দাবি করেছিলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি শৃঙ্খলা ও কাঠামোর ওপর জোর দেবেন।
লুমার অতীতে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। এমনকি তার কারণে রিপাবলিকান নেতাদের সঙ্গেও তার দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই হোয়াইট হাউসে তার প্রবেশ, প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বাইরের প্রভাবের বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।
লুমার, যিনি নিজেকে ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত করেন, তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডেও উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা কিছু রিপাবলিকানকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে বাধা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন, যাদের তিনি ট্রাম্পের প্রতি অনুগত মনে করেন না।
লুমার এই ধরনের নিয়োগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি গবেষণা সংস্থা খোলার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, লুমার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে আমার বৈঠকের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করতে রাজি নই।” তিনি আরও জানান, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্মানের।
আমি তার এজেন্ডাকে সমর্থন করতে এবং শক্তিশালী যাচাই-বাছাইয়ের গুরুত্বের ওপর জোর দিতে থাকব।”
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস এই মিটিং সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
লুমার দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহলে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। একাধিকবার তিনি কংগ্রেসের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্যর্থ হন।
জানা গেছে, ট্রাম্পের সঙ্গে তার নিয়মিত ফোনে কথা হতো। তবে, উপদেষ্টারা তাকে সরাসরি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে দিতে রাজি ছিলেন না।
তবে এবার লুমারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত অনেককে অবাক করেছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন